নিউজ ডেষ্ক- গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় খাবারের বিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে আজ মঙ্গলবার ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে নিউমার্কেট এলাকা অবরোধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। এতে নিউমার্কেট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সকল দোকানপাট বন্ধের সঙ্গে সড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় চারজনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর জের ধরে নিউমার্কেট খুলতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার ১৯ এপ্রিল থেকে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। ঢাকা কলেজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নির্দেশনায় দেওয়া ওই ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, অনিবার্য কারণে ১৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণির সকল ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হলো। সকল শিক্ষককে সকাল ১০টার মধ্যে কলেজে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে সংঘর্ষের শুরুর দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। এ সময় উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ছোড়ে পুলিশ। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ থামলেও নিউমার্কেট এলাকাজুড়ে রাতভর উত্তেজনা বিরাজ করে।
পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তারা পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে তাদের অনেকেই আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র নিউমার্কেটে যায়। যে দোকানে তারা গিয়েছিল সেই দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে তাদের তর্ক হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, সেই কর্মচারী তাদের গায়ে হাত তুলে। পরে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য দলবল নিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় আসে। এ সময় তারা প্রথমে নিউ মার্কেটের ৪ নং গেইট ও পরে ২ নং গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করে। দুই নং গেইট ভেঙে ভেতরে কয়েকজন ঢুকেও পড়ে। পরে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে হল ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করি।
এ সময় মার্কেট খুলতে না দেয়ার দাবির বিষয়ে ডিসি সাজ্জাদ রহমান বলেন, এটা রমজান মাস। রমজানের শেষ দশক চলে এসেছে। এখন দোকানপাট বন্ধ রাখার দাবি কোনো বিবেচনা প্রসূত কাজ নয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন। যদি কোনো সমঝোতার প্রয়োজন হয় তাহলে সেটি তারা করবেন। মার্কেটের সাথে দ্বন্দ্ব নিরসনের উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু মার্কেট খুলতে না দেয়ার বিষয়টি যথাযথ সিদ্ধান্ত নয়।