নিউজ ডেষ্ক- তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভোটের সময় ভোটকক্ষে বা গোপন কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা সংস্থাপনে ভোটারদের ভোটার হিসেবে অধিকার লঙ্ঘন হয় বলে সাধারণ মানুষ ও আইনজ্ঞদের অভিমত।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গোপন কক্ষ, গোপন কক্ষই। সেখানে মানুষ গোপনে ভোট দেবে। কিন্তু সেখানে যদি ক্যামেরা লাগানো হয় তাহলে তো সেটা গোপন থাকে না। এটা সাধারণ মানুষ ও আইনজ্ঞদের অভিমত। নির্বাচন কমিশন যদি এটা দেখে ও অন্যদের দেখায় তাহলে সেটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে। গোপন কক্ষে সিসিটিভি নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এতে ভোটারের ভোটার হিসেবে অধিকার লঙ্ঘন হয় বলে আইনজ্ঞরা বলছেন। আমি বলছি না, আইনজ্ঞরা বলছেন। এটি সবার অভিমত। সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে তবে কে কোথায় ভোট দিচ্ছে, সেটা দেখলে কি সেটা গোপন থাকলো?
নির্বাচন কমিশন ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষে ক্যামেরা লাগিয়ে দূর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেই কক্ষের কার্যক্রম দেখছে। এটা কতটা যুক্তিযুক্ত, এটা আইনের লঙ্ঘন কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সমালোচনা দেখেছি। বেশ কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে এটির সমালোচনা করে নিউজ দেখেছি। আজকেও দেখেছি। আপনাদের জন্য একটি প্রিন্ট করেও এনেছি।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমসহ অন্যান্য জায়গায় যে নিউজ হয়েছে, সেখানে তাদের বক্তব্য হচ্ছে, গোপন কক্ষ গোপন কক্ষ এবং মানুষ গোপনে ভোট দেবে এটা তার অধিকার। সেখানে যদি ক্যামেরা লাগিয়ে কে কোথায় ভোট দিচ্ছে সেটি দেখা হয়, তাহলে গোপন কক্ষ তো গোপন থাকলো না। সেটি আবার অন্যদের দেখানো হয়। আইনজ্ঞরা বলছেন, প্রতেক্যের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আছে, সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ। এটি সাধারণ জনগণ ও আইনজ্ঞদের অভিমত।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই মেয়র নির্বাচনের আগের মেয়র নির্বাচনে সম্ভবত শামীম ওসমান কাকে ভোট দিয়েছেন, সেটি গণমাধ্যমের সামনে দেখিয়েছিলেন। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে নোটিশ করেছিল যে, আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি গণমাধ্যমে দেখাতে পারেন না। জনসম্মুখে দেখাতে পারেন না। যে নির্বাচন কমিশন নোটিশ দিয়েছিল সেই নির্বাচন কমিশন যদি ক্যামেরা লাগিয়ে নিজে দেখে ও অন্যদের দেখায়, সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে, গোপন কক্ষে নয়—এটি অন্যদের অভিমত।
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন আইনজ্ঞরা। আমি আইনজীবী নই। আইনজ্ঞদের অভিমত, সেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন।
এর সঙ্গে কি আপনি একমত—এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সেটা যদি আইনগতভাবে শুদ্ধ হয়, সেটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। কারণ গোপন কক্ষে যদি ক্যামেরা লাগিয়ে আপনি দেখেন বা দেখান তাহলে সেটা গোপন কক্ষ থাকে কীভাবে? এটিই সবার অভিমত।