নিউজ ডেষ্ক- রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গতকাল রবিবার দুই থেকে তিনবার লোড শেডিং হয়েছে। রাজধানীর বাইরে গ্রামাঞ্চলে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লোড শেডিং হয় বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। গরমে অতিরিক্ত লোড শেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ।
বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো বলছে, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় এলাকাভিত্তিক শিডিউল অনুযায়ী এক ঘণ্টার লোড শেডিংয়ের নির্দেশনা তারা মানতে পারছে না।
তাই বাধ্য হয়েই একাধিকবার লোড শেডিংয়ে যাচ্ছে তারা।
জ্বালানি সাশ্রয়ে ১৯ জুলাই থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে শুরু হয় এলাকাভিত্তিক লোড শেডিং। রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) গতকালের জন্য শোড শেডিংয়ের যে শিডিউল প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে, রাজধানীর কোনো এলাকায় একবার লোড শেডিংয়ের আওতায় রাখা হয়নি। প্রত্যেকটি এলাকা দুই থেকে তিনবার এক ঘণ্টা করে লোড শেডিংয়ের আওতায় রাখা হয়।
রাজধানীর বাইরে বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোড শেডিং হচ্ছে। আজ (গতকাল) দিনের বেলা আমাদের চাহিদা ছিল সাত হাজার মেগাওয়াট, সরবরাহ দিতে পেরেছি ছয় হাজার ২০০-৩০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। রাতের বেলা চাহিদা ছিল আট হাজার মেগাওয়াট, সরবরাহ দিতে পেরেছি ছয় হাজার ৮০০-৯০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। ’
গতকাল ময়মনসিংহ শহরে লোড শেডিং কিছুটা কম হলেও গ্রাম এলাকায় লোড শেডিং ছিল পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিত দেবনাথ বলেন, ‘বিদ্যুতের বরাদ্দ কম পাওয়া সাপেক্ষে লোড শেডিং করা হচ্ছে। তাই অনেক সময় শিডিউল মানা সম্ভব হচ্ছে না। ’
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোড শেডিংয়ে শিক্ষার্থীসহ বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষের ভোগান্তি বেশি। গত ১৫ দিনে প্রায় প্রতিদিনই ওই সব উপজেলার হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ওই তিন উপজেলায় এক সপ্তাহে কমপক্ষে ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কুমিল্লায় ছয় থেকে আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে বেশির ভাগ স্থানেই দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। গ্রাহকদের অভিযোগ, কুমিল্লায় প্রথম দিন থেকেই মানা হচ্ছে না এলাকাভিত্তিক লোড শেডিংয়ের সিডিউল। বরং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লোড শেডিং করা হচ্ছে। ফলে মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)