নিউজ ডেষ্ক- গত ২৪শে ডিসেম্বর জার্মানির সম্প্রচারমাধ্যম ডয়চে ভেলের ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বহুল আলোচিত, সদ্য সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। সেখানে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে আলোচনায় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেন জেনারেল আজিজ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার তথ্যচিত্র, নিজ ভাইদের ‘অপকর্মের’ সাথে জড়িয়ে নানা অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে নিজের ভিসা বাতিলসহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে খোলোমেলা কথা বলেন তিনি। তবে সবগুলো অভিযোগই অস্বীকার করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাংবাদিক খালেদ বরাবরের মতোই জার্মানির বন শহর থেকে সবাইকে স্বাগত জানালেও জেনারেল আজিজ কোন দেশের কোন শহর থেকে তার সাথে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন তা দর্শকদের জানানো হয়নি। তবে জানা যায়, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ওই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
জেনারেল আজিজের দেয়া সাক্ষাৎকার যারা দেখেছেন তারা প্রায় সবাই বলেন, তাকে করা বিভিন্ন প্রশ্নের কোনোটিরই উত্তর তিনি এক কথায় দিয়ে দেননি অর্থাৎ ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনটাই বলেন নি। গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে তাকে করা একেবারে প্রথম প্রশ্নটি করা হয় “আপনার কি যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যালিড ভিসা আছে এই মুহুর্তে?” এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ অনেক কথাই বললেও, হ্যা অথবা না কোনটাই বলেননি।
তিনি বলেন “এজ ফার এজ আই অ্যাম কনসার্ন, ইয়েস (আমি যতটুকু জানি, আছে)”। সাংবাদিক খালেদ বিভিন্ন কৌশলে সরাসরি উত্তরটি জানতে চাওয়ার চেষ্টা করলেও আজিজ একবারও শুধুই ‘ইয়েস’ বা ‘হ্যাঁ’ বলেননি।
সেনাপ্রধানের দায়িত্ব ছাড়ার পরপরই তার ব্যক্তিগত সহকারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় বলে একটি খবর গণমাধ্যমে এসেছিলো। তার ‘ব্যক্তিগত সহকারী’কে দুর্নীতি বা মিসকন্ডাক্টের কারণে বরখাস্ত করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবও তিনি সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’কোনটাই কিন্তু বলেননি। তিনি উত্তরে বলেন, “আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, আমি যখন রিটায়ারমেন্টে আসি, তখন শুনেছি সে অবসরে চলে গিয়েছে।”
এর আগে আল-জাজিরার প্রকাশিত তথ্যচিত্রে জেনারেল আজিজ আহমেদ ও তার একজন কোর্সমেটের কথোপকথন ফাঁস করা হয়। তার দাবি, ফাঁস হওয়া অডিওটি মোটেও সঠিক নয়। এ বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করেছেন জানিয়ে বলেন, “আগামী (২০২২) জুনের ২৫ তারিখের পর থেকে আমার পুরোপুরি রিটায়ারমেন্ট শুরু হবে। তখন আমি চিন্তা করবো এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।”কিন্তু অনেকের প্রশ্ন একটাই, জেনারেল আজিজ যদি তার চাকরির বর্তমান অবস্থায় টকশোতে এসে এমন সব স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারেন, তাহলে আর এতো অপেক্ষা কেন?