সুক্ষ কারচুপি সম্ভব ইভিএমে: সাবেক ইসি

বাংলাদেশ breaking subled

ইভিএম যেখানে ব্যবহার হচ্ছে ব্যবহার করুন। ব্যালট পেপারে নিয়ে গেলেও সেটা ফাইন্ড করা সম্ভব। কিন্তু ইভিএমে সুক্ষ কারচুপি সম্ভব। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সম্মেলন কক্ষে সাবেক সিইসি ও কমিশনারদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমনটি জানান।এ বৈঠকে সাবেক তিন সিইসি ৩ কমিশনারসহ ১৪ জন অংশ নেন।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইভিএম যেখানে ব্যবহার হচ্ছে ব্যবহার করুন। ব্যালট পেপারে নিয়ে গেলেও সেটা ফাইন্ড করা সম্ভব। কিন্তু ইভিএমে সুক্ষ কারচুপি সম্ভব। বাইরে কোনো হইচই নাই, কিছু নাই, ভেতরে কী হচ্ছে। অন্য সিস্টেমে হলে বাইরেও হইহই হবে। সেটা আরো ভাল করে দেখতে পারবেন। কারণ কেন্দ্র ক্যাপচার করতে তো পাঁচ-ছয়জন লোকবল লাগবে।

তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা নিয়ে বিতর্ক আছে। সেটা ভাল হোক, মন্দ হোক। সিসি টিভি তো কষ্ট করে দেখতে হয়। কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নির্বাচন সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী তারা নির্বাচন করার জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার বলেন, পাঁচ বছর আমাদের যে অভিজ্ঞা হয়েছিল, সেটা ইউনিক। আর কোনো কমিশন সেটা পারেনি। প্রথমেই আমি যেটা বলেছি গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে যে পদক্ষেপ নিয়েছে আমি তাদের স্বাগত জানিয়েছি। এ পর্যন্ত ঠিক আছে, পরের ধাপগুলোতে যেন স্লিপ না করেন। যদি করেন, তাহলে জাতির কাছে অন্যরকম একটা মেসেজ যাবে, যে আপনারা এইটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিটুকু করলেন না।

তিনি বর্তমান কমিশনের উদ্দেশ্য বলেন, আইন আপনাদের শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে। প্লিজ ডু ইট। আর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে পরিবেশ ঠিক নেই, তাহলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারেন। কোথাও কোনো বাধা নেই। কারণ সংবিধানের ১১৯ ধারা বলে আপনার কাজ হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। বাকিটা আপনাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কোনো কমিশন এর আগে এই কাজটি করতে পারেনি। ৯৪ সালে যদি এটা করা হতো তাহলে আজকের পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। আপনারা নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বা যাদের দিয়ে নির্বাচন করবেন তাদের আত্মবিশ্বাসে আনতে হবে। বরিশালে যেটা ভাইরাল হতে দেখেছি, এখানে ইউএনওকে প্রকেটশন দেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের।

তিনি বলেন, কারা দোষী তাদের বের করে যদি ব্যবস্থা নিতে না পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে আর আস্থা পাবেন না। কাজেই এটা করতে হবে। শুধু বন্ধ করলাম না, যে ক্ষমতা আছে তা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। যে কর্মকর্তারা চিঠি দিয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাবেক এ ইসি বলেন, সবচেয়ে বড় স্ট্রং হচ্ছে সাব কন্টিনেন্টে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে বড়। আড়াই হাজার লোকবল ও অফিস নিয়ে আর কোনো নির্বাচন কমিশনের এটা নেই। তবে লোকগুলোর ব্যবহার করতে হবে।একটা বড় জেলায় ১৬টা পর্যন্ত সংসদীয় আসন। ১০কোটি ভোটার। এখানে একজন রিটার্নিং অফিসার দিয়ে হবে। এজন্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে আপনাদের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, সাবেক ইসি সচিব মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন।

সিইসির সভাপতিত্বে এ সভায় নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা, আনিছুর রহমান, মো. আলমগীর উপস্থিত রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব দেশের বাহিরে রয়েছে। বর্তমান কমিশন কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচন করেছে। ইভিএমে ভোট হয়েছে; সিটি নির্বাচন ও পৌর নির্বাচনে সিসি ক্যামেরাওে ব্যবহার করা হয়েছে। গাইবান্ধা উপ নির্বাচন হয়েছে ১২ অক্টোবর; সিসি ক্যামেরায় ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ার পর ভোটের মাঝ পথে তা বন্ধ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের সাবেক সহকর্মীদের মতামত নিতে চায় নতুন এ কমিশন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *