নিউজ ডেষ্ক- সাবেক প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কায় গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন সরকার। আর বিরোধী দলীয় নেতা সাজিদ প্রেমাদাসা এই সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারেন। ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া সংবিধান সংশোধন করে পার্লামেন্টের হাতে আরো ক্ষমতা ন্যস্ত করার প্রতিশ্রুতি প্রদানের প্রেক্ষাপটে নতুন সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী নিযুক্তির পর পার্লামেন্টের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদেও পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মূলত, প্রায় ১ মাস থেকেই বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা। চলমান এই বিক্ষোভের ফলে প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেও প্রেসিডেন্ট এখনো ক্ষতমতায় রয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা তারও পদত্যাগ দাবি করে আসছে। এর ফলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। চলমান এই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য শ্রীলঙ্কায় চলমান কারফিউর সময় আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত সোমবার দেশটিতে নজিরবিহীন সহিংসতা দেখা যায়। ওই দিন ৯ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়। রাজাপাকসেদের পৈত্রিক বাসভবন জ্বালিয়ে দেয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে হামলা চালানো হলে তিনি সেনাবাহিনীর তদারকিতে এক নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজধানী কলম্বোর রাস্তায় ব্যাপক সামরিক ও পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোলযোগকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশব্যাপী আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান বিরোধী জোট সামাগি জন বালাবেগায়া (বিজেবি) পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেতা সাজিদ প্রেমাদাসাকে নতুন সরকার গঠনের জন্য মনোনীত করেছে।
এসজেবি এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা সাজিদ প্রেমাদাসার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রেমাদাসা হলেন ১৯৮৯-১৯৯৩ সময়কালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকারী প্রেসিডেন্ট রনসিঙ্গে প্রেমাদাসার ছেলে। সাজিদও ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু রাজাপাকসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। প্রেমাদাসার প্রধানমন্ত্রিত্বের বিষয়ে শ্রীলঙ্কার সাবেক সরকার-সমর্থক জোটের অংশ ফ্রিডম পার্টিও সমর্থন করেছে। গোতাবায়া রাজপাকসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি পার্লামেন্টকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংশোধনী প্রস্তাব আনবেন। শ্রীলঙ্কার সাধারণ নাগরিকরা দেশের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়াকে দায়ী করছে।