মাছ ভেসে এলো সৈকতে, কুড়ানো উৎসবে মানুষ!

breaking subled দেশজুড়ে

নিউজ ডেষ্ক- কক্সবাজার সৈকতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ বিপুল পরিমাণ মাছ ভেসে আসে। মাছ কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে স্থানীয় লোকজন। বাদ যায়নি পর্যটকরাও। পরে জানা যায়, সাগরে জেলেদের জালে বিপুল পরিমাণ মাছ ধরা পড়ে।

গতকাল সকাল ৯টার পর থেকে সৈকতের লাবনী ও শৈবাল পয়েন্টে জেলেদের ফেলে দেওয়া মাছ ভেসে আসতে থাকে। এর মধ্যে ছিল পোয়া, ইলিশ, লইট্টা, ছুরিসহ নানা প্রজাতির মাছ।

স্থানীয় লোকজন জানায়, সৈকতজুড়ে মাছ আর মাছ দেখে তারা বিস্মিত হয়ে পড়ে। কিছুদিন আগে দফায় দফায় জেলিফিশ ভেসে এসেছিল। পরে মাছ ভেসে আসার প্রকৃত কারণ জানার পর মানুষ উৎসবে মেতে ওঠে। তারা মাছ কুড়াতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া এফবি আরিফ নামে একটি নৌকার মাঝি আবুল কাসেম বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে লাবনী ও শৈবাল পয়েন্টের মাঝামাঝি জায়গায় জাল ফেলছি। টানার সময় আমরা বুঝতে পারছিলাম বেশ মাছ আটকা পড়েছে। আমাদের ট্রলার ছোট। আমরা নেওয়ার পরও অনেক মাছ জালে থেকে যায়। সেগুলো সৈকতে ফেলে দিতে বাধ্য হই। ’ তিনি জানান, তাঁর মতো আরো অনেকে মাছ ফেলে দিয়েছেন।

সৈকতের বালুচরে ভেসে আসা মাছ কুড়াতে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগ দেন পর্যটকরাও। ভেসে আসা মাছের মধ্যে ছিল পোয়া, ইলিশ, লইট্টা, ছুরি ইত্যাদি। জেলেদের বিহন্দি ও টানা জালে এসব মাছ ধরা পড়ে। এত বেশি পরিমাণ মাছ নিতে না পেরে অনেক জেলে জালসহ ফেলে যান।

কক্সবাজার মৎস্য গবেষণাগারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শীত মৌসুমে এ রকম ছোট মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে সাগরের তীরে আসে। জেলেরা মাছের এ রকম ঝাঁকে জাল ফেলায় অতিরিক্ত মাছ ধরা পড়ে। ’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত সৈকতে এ রকম মাছ ধরা পড়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক গাজী মিজান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এমন দৃশ্য আমি আগে কখনো দেখিনি। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল মাছ কুড়াতে। ’ তিনি বলেন, অনেকেই ঠেলা গাড়িতে করে বস্তা ভর্তি করে মাছ নিয়ে যায়। অন্তত সাত-আট টন মাছ ভেসে আসে বলে তিনি ধারণা করছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক শামীম হোসেন বলেন, ‘সৈকতে মাছ পড়ে আছে দেখে আমিও এক বস্তা নিয়েছি। ’ তিনি বলেন, অনেক পর্যটকও মাছ কুড়িয়েছে। তাদের অনেকে অবশ্য সৈকতেই বিক্রি করে ফেলেছে। আবার অনেকে বস্তায় করে নিয়ে গেছে।

সৈকতের লাইফগার্ড ইনচার্জ ওসমান গণি বলেন, মাছের পরিমাণ এত বেশি যে তা আন্দাজ করা মুশকিল। বিচকর্মী মাহাবুবুর রহমান বলেন, জেলেদের ফেলে দেওয়া মাছগুলো মূলত সৈকতে ভেসে এসেছিল। সৈকতে মাছ কুড়াতে গিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *