ভালো কিছুর খোঁজে ডারবানে বাংলাদেশ

খেলা

নিউজ ডেষ্ক- নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অধরা টেস্ট জয় চলতি বছরের শুরুতে। মাউন্ড মঙ্গানুই টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। মাউন্ট মঙ্গানুই থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে মাঠের লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়তে মরিয়া সফরকারী বাংলাদেশ।

ওয়ানডে সিরিজ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বিশ বছরের খরা কাটিয়েছে বাংলাদেশ। রঙিন পোশাকের দুরন্ত ফর্মই তাতিয়ে দিচ্ছে মুমিনুলদের। যদিও ডারবানের কিংসমাডে এর আগে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। প্রথমবারের মতো এই মাঠে টেস্ট খেলতে নামবে মুমিনুলরা। এখানে আছে শুধুমাত্র একটি ওয়ানডে খেলার। সেটিও কানাডার বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে বাংলাদেশের দুঃসহ স্মৃতি। কারণে সেই ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ।

ডারবানের এই ভেন্যু পেসারদের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ঐতিহ্যগত শক্তিতে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং। তবে ডারবানে সর্বশেষ নয় টেস্টের মধ্যে তাদের জয় মাত্র একটিতে। সাতটিতে হার। একটিতে ড্র। এই মাঠে গত ১৩ বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র জয় ২০১৩ সালে। ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল প্রোটিয়ারা। ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ ড্র করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দু’দিনে ঐ টেস্টে মাত্র ৮৯ দশমিক ৪ ওভার খেলা হয়েছিলো।

তাই পরিসংখ্যানের বিচারে ডারবান ও পোর্ট এলিজাবেথে (দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু) টেস্ট হওয়াতে অখুশি দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। কারন এই দুই ভেন্যুতে জয়ের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে প্রোটিয়াদের। কিন্তু জয়ের সংখ্যা হাতে গোনা। তিনি বলেন, ‘সূচি এবং ভেন্যু নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। আশা করি ভবিষ্যতে এটি পরিবর্তন হতে পারে।’ তবে ডারবানের উইকেটে ঘাস দেখে খুশি এলগার। তিনি আশা করছেন, ম্যাচের আগে ঘাস কাটার পরও অনেকটাই অবশিষ্ট থাকবে। এলগার বলেন, ‘তারা যা করেছে, তার সাথে আমি খুব বেশি পরিচিত নই। তবে মনে হচ্ছে কিংসমিডে ঘাস কিছুটা বেড়েছে। আশা করি, তারা এটি সুন্দর করবে এবং আরও বেশি গতি এবং বাউন্স তৈরি করতে পারবে।’

যদি এলগারের আশা পূরণ হয়, তবে পুরনো কিংসমিডকে দেখা যেতে পারে। যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড, ১৯৯৬/৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ৫৪ রানে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন। ঐ টেস্টে ভারত যথাক্রমে ১০০ ও ৬৬ রানে অলআউট হয়েছিলো। এমনকি উইকেটে গতি আনা হলেও দলের শীর্ষ পেসার কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি এবং মার্কো জানসেনকে ছাড়াই লড়াইয়ে নামতে হবে এলগারকের। ইনজুরির কারনে সিরিজে নেই এনরিচ নর্টি।

ইংল্যান্ডের কোলপাক চুক্তি থেকে জাতীয় দলে ফিরলেও, বল হাতে গতি হারিয়েছেন পেসার ডুয়াইন অলিভিয়ার। তাই বর্তমান দলে অভিজ্ঞ টেস্ট পেসার লুথো সিপামলা এবং গ্লেন্টন স্টুরম্যান। দু’জনে মিলে ১৩ উইকেট নিয়েছেন, যথাক্রমে তিনটি এবং একটি করে টেস্ট খেলেছেন তারা। এলগার জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং কম্বিনেশনে দুই স্পিনারকে রাখার পরিকল্পনা আছে। এতে বাঁ-হাতি স্পিনার কেশব মহারাজের সাথে দেখা যেতে পারে ছয় বছর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা অফ-স্পিনার সাইমন হার্মারকে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় আগের তিনটি সফরে ছয়টি টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পাঁচটিই ইনিংস ব্যবধানে। কিন্তু এবারের সফরের শুরুতে ওয়ানডে সিরিজ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জয়ের খড়া কাটায় বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম ইকবাল। আর টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিবেন মুমিনুল হক। তবে টেস্টে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবে বড় ভূমিকা রাখবেন তামিম।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন এবং মুস্তাফিজুর রহমান টেস্ট স্কোয়াডে না থাকায় ওয়ানডে দল থেকে কমপক্ষে চারটি পরিবর্তন করতে হবে বাংলাদেশকে। সেই সাথে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ থাকায় দেশে ফিরে আসেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাই প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না সাকিব।

বাংলাদেশ দল : মোমিনুল হক (অধিনায়ক), আবু জায়েদ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল হাসান জয়, মেহেদি হাসান, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, নুরুল হাসান, সাদমান ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ ও ইয়াসির আলি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *