দুর্বৃত্তরা কেটে দিল ফলন আসা সব পেঁপে গাছ

দেশজুড়ে breaking subled

নিউজ ডেষ্ক- ভালো ফলনের আশায় পুরোনো গাছ কেটে নতুন করে এক বিঘা জমিতে এক অসহায় নারী রোপণ করেছিলেন কয়েক’শ চারা। চারা লাগানো, ওষুধ, সার বাবদ খরচ করেছেন প্রায় ১ লাখ টাকা। নতুন চারায় এসেছিল থোকায় থোকায় ফলন। মাস খানেকের মধ্যেই গাছগুলোতে আসা পেঁপে পাকতো। পেঁপে বিক্রি করে আয় হতো প্রায় ২-৩ লাখ টাকা। কিন্তু ওই নারীর এই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।

সোমবার (৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে ১ বিঘা জমির ওই পেঁপে বাগান কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিএমচর এলাকায়। ওই নারীর নাম খোরশিদা বেগম। তিনি বিএমচর ইউপির ২নং ওয়ার্ডের বাক্কার পাড়া গ্রামের শারিরীক ভাবে অসুস্থ শফর মুল্লুকের স্ত্রী।

ভুক্তভোগী খুরশিদা বেগম বলেন, আমার নিজ বাড়ির পাশে নিজস্ব একবিঘা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষেত-খামার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এরই মধ্যে উক্ত জমিতে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করি। গত ৩/৪ মাস পূর্বে রাতের বেলায় কে বা কারা আমার বাগানের বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলে। বিষয়টি স্থানীয় সর্দার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। সর্বশেষ রবিবার রাতে ক্ষেতের চারপাশে রোপণ করা শতাধিক পেঁপে গাছের মধ্যে প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে ফেলেছে দূর্বৃত্তরা। প্রতিটি গাছে বিশ থেকে ত্রিশ টি পেঁপে রয়েছে।

পুত্র সন্তানহীন পরিবারের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম ‘ক্ষেত-খামারের ফসল’ নষ্ট করে দেওয়ায়, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী খুরশিদা বেগম।

স্থানীয়রা জানান, শফর মুল্লুক দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। তার চারটি কন্যা রয়েছে। নিরুপায় হয়ে তার স্ত্রী খুরশিদা বেগম অনেক কষ্ট করে এই ক্ষেত-খামারটি করেছিলেন। গাছের পেঁপে গুলো বিক্রি করার উপযোগী হওয়ার মুহুর্তেই দূর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে গাছ গুলো কেটে দিয়ে যে সর্বনাশ করেছে! গাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা তাদের বোধগম্য হচ্ছেনা বলে নানান স্থানীয়রা।

কালিক উল্লাহ নামের এক প্রতিবেশীর বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে পেঁপে গাছ কাটা খুবই দুঃখজনক। মাঝে মধ্যেই কৃষকদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। দোষীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

বিএমচরের চেয়ারম্যান এসএম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ইউনিয়নের বাক্কার পাড়ার অসহায় কৃষক খুরশিদা বেগমের বাগানের পেঁপে সহ বিভিন্ন প্রজাতির অনেক গাছ কেটে ফেলার বিষয়টি শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

তিনি আরোও বলেন, ফলদগাছ কাটা, মানুষ হত্যার সমান। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেপি দেওয়ান বলেন, বিএমচরে অসহায় কৃষকের অনেকগুলো পেঁপে গাছ কেটে ফেলার বিষয়টি শুনেছি।তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *