অবশেষে টেঁটাযুদ্ধের অবসান হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়

বাংলাদেশ breaking subled

নিউজ ডেষ্ক- অনেক বছর ধরেই সামাজিক গোষ্ঠীগত দাঙ্গায় বেকারত্ব বাড়ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকটি উপজেলায়। মামলার ঘানি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষের ঘাড়ে। তবে দীর্ঘ কয়েক যুগের টেঁটাযুদ্ধের অবসান হতে চলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। দাঙ্গা দমনে নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে সব উদ্যোগই ভেস্তে যাবে।

এদিকে গেলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে সরাইল, নাসিরনগরসহ কয়েকটি উপজেলায় সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। দাঙ্গাপ্রবণ এলাকাগুলোর প্রত্যোক বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে উদ্ধার করা হয় কয়েক হাজার টেঁটা-বল্লমসহ ধারালো অস্ত্র। গোষ্ঠীগত দাঙ্গা বন্ধে চলছে পুলিশের মামলা থেরাপী। এটি অনেকটাই কাজ দিয়েছে বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, মামলা হলে আপনারা কোনো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাবেন না, পাসপোর্ট ইস্যু করতে পারবেন না এমনকি বিদেশেও যেতে পারবেন না। পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করলে এই মামলাটা ১০, ১৫ বা ২০ বছরেও হয়তো শেষ হবে না। এর বাইরে, সংঘাত এড়াতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে জেলা ব্যাপি। কর্মকর্তারা জানালেন, এই ব্যবস্থা চালুর পর বড় ধরনের সংঘর্ষের কোন ঘটনা ঘটেনি জেলায়।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকটি মহল্লায় সমাবেশ করে এ ধরনের অপরাধের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এবং তাদের ছোটখাটো বিরোধগুলো জিডির মাধ্যমে সমাধান করার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

তবে, পুলিশের দায়ের করা মামলায় ভোগান্তি বেড়েছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ তানভীর হোসেন কাউসার বললেন, এই মামলাগুলো কোনোভাবেই শেষ হওয়ার তো সুযোগ নেই। দেখা যায় যে, যারা এখানে চাকরি করতো তারা দূর-দূরান্তে চলে গেছে তারা হয়তো ঠিকভাবে নোটিশ পায় না, বা তাদের কাছে সমন সার্ভ হয় না, ওয়ারেন্ট যায় না, এভাবেই মামলাগুলো বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে। এমনও হয় যে ৩০ বছর বয়সে মামলা দায়ের হলো ১০ বছর পর বয়স ৪০ হয়ে গেছে কিন্তু মামলা শেষ হয়নি।

অপরদিকে, বিশিষ্টজনরা বলছেন, টেঁটাযুগের অবসানে সচেতনতা, বিচার ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরী। এ প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট ইতিহাস বিশারদ ও কবি জয়দুল হোসেন বলেন, গ্রামের মধ্যে যারা প্রভাব বিস্তার করে রাখতে চায় বা যারা সর্দার ও মাতব্বর আছে তারা একগোষ্ঠীকে অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লাগিয়ে রেখে তারা তাদের ফাউদা লোটার চেষ্টা করে। এই সুবিধাবাদি গোষ্ঠীকে দমন করতে হবে।

এখন আশার কথা হচ্ছে, নেতিবাচক প্রচারণার কারণে জেলার মানুষও চায় বন্ধ হোক এমন সংঘাত, শান্তি আসুক, দৃঢ় হোক সামাজিক বন্ধন। একই সঙ্গে সামাজিক দাঙ্গায় উষ্কানিদাতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সাধারণ মানুষ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *