নিউজ ডেষ্ক-বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে গাভী পালন করা হচ্ছে। আর গাভী পালনে লাভবান হওয়ার জন্য সঠিক সময়ের মধ্যে বাচ্চা উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। আর উন্নত জাতের বাচ্চা উৎপাদনের জন্যই গাভীকে উন্নত জাতের বীজ প্রদান করা হয়। এই জন্য জানা দরকার খামারিদের গাভী কখন হিটে আসে সেই বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকা উচিত।
গাভী হিটে আসার লক্ষণ ও করণীয় শিরোনামের বিষয়টি এগ্রিকেয়ার২৪.কম’র সাথে আলোচনা করেছেন রাজশাহী ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও নারী উদ্দোক্তা সাথী আক্তার।
গাভী হিটে আসার লক্ষণ সমূহ সকল ডেইরি খামারিদের জন্য অবশ্যই জানা দরকার। আমাদের বাংলাদেশের বেশিরভাগ খামারিরা জানেন না গাভী কখন হিটে আসে বা হিটে আসার লক্ষণ কি কি আছে? আর এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে তারা সময়মতো গাভিকে বিজ দিতে ব্যর্থ হয় ফলে গাভী কনসিভ করে না বা বীজ রাখতে পারে না। জেনে নিন গাভীর হিটে আসার লক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে-
গাভী হিটে আসার লক্ষণঃ মূলত প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে একটি পূর্ণ বয়স্ক গাভী গর্ভধারণের জন্য হিটে আসে। প্রতিটি গাভী স্বাভাবিক নিয়মে ১৮ থেকে ২৪ দিন বিরতিতে ঋতুচক্রে ফিরে আসে। সাধারণত বেশিরভাগ গাভী রাতে হিটে আসতে দেখা যায়, ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডাকে আসার লক্ষণ বোঝা যায় না।
গাভীর ডাকে থাকা অবস্থা প্রায় ৬ থেকে ১৮ ঘন্টা স্থায়ী হয়। এ সময়ে প্রথম ৮ থেকে ১০ ঘন্টা গাভী অস্থির থাকে, তার যৌনদ্বার দিয়ে স্বচ্ছ সুতোর মত আঠাযুক্ত পানি বের হয় এবং অন্য গাভীর উপর লাফিয়ে উঠতে চেষ্টা করে। গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো হিটে আসা গাভীর উপর অন্য গরু উঠলে সে নীরব থাকে। সাধারণত ডাকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা পর চূড়ান্ত ডাক আসে।
গাভী হিটে আসার সময় ছটপট করবে। স্থির থাকতে পারবেনা। কম খাবে। গাভীর মাজা মুড়াবে। আবার অনেক গরু আছে তারা হামলায় আবার অনেক গরু হামলায় না। লেজের গোড়া বা তার আশপাশের জায়গায় শুকনা আঁঠালো পদার্থ লেগে থাকে। উত্তেজনা পর্ব ১ দিন বা ২৪ ঘন্টা স্থায়ী থাকে। অন্য গাভীর যৌনাঙ্গ শুকতে থাকবে।এছাড়া দুধ উৎপাদন কমে যাবে।
সতর্কতা ও করণীয়ঃ উত্তেজনা ২৪ ঘন্টা স্থায়ী থাকে। আর আমাদের খামারি ভাইয়েরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম দিকে সিমেন দিয়ে থাকেন। কিন্তু এভাবে বিজ দিলে কন্সেপ্ট না করার হার ৯৯%। সুতারাং এই ধাপে কখনোই গাভীকে বীজ বা সিমেন দেওয়া যাবে না।
অপুষ্টি, আবহাওয়া, জলবায়ু, জাতের প্রভাব এবং বিশেষ করে প্রসবের পর ২/৩ ঋতুচক্রের সময় অনেক গাভীর ডাকে আসার লক্ষণ খুবই মৃদুভাবে প্রকাশ পায়। এসব ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ডাকের লক্ষণগুলি কমপক্ষে ২ ঘন্টা পর পর কাছ থেকে নজর রাখতে হয়। লেজের গোড়া বা তার আশপাশের জায়গায় শুকনা আঁঠালো পদার্থ লেগে আছে কিনা তা দেখতে হবে। এছাড়া আগের মাসের ডাকে আসার সঠিক দিনক্ষণ মনে রাখতে হবে।
প্রিয় খামারি মনে রাখতে হবে, গাভী বা গরুর যে কোন সমস্যা হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আপনাকে সেবা দিতে হবে। এছাড়া এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর ফেসবুক পেজে ম্যাসাঞ্জারে আপনাদের যেকোনো সমস্যার কথা জানাতে পারেন, আমরা বিশেষজ্ঞ এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আপনাদের জানাবো।