নিউজ ডেষ্ক- জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক অঙ্গণে উত্তাপ ততই বাড়ছে। আগামী নির্বাচন ইস্যুতে কথার লড়াই অবশ্য শুরু হয়েছে বেশ আগে থেকেই। এবার মাঠের লড়াই তথা রাজপথের আন্দোলন শুরু হওয়ার পালা। সেই লক্ষ্যে বিএনপির বাইরে থাকা সরকারবিরোধী সবগুলো দল নিয়ে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক জোট।
একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের দাবি কোনো আলোচনার মাধ্যমে নয়, রাজপথ থেকেই আদায় করে নিতে হবে- এ ব্যাপারে জোটের উদ্যোক্তাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। তবে জোটের রূপরেখা কেমন হবে, কে থাকবেন নেতৃত্বে- এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ঈদের পর বিষয়গুলোকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।
জানা গেছে, শিগগিরই আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া এই জোটের নেতৃত্বে থাকবেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব। এছাড়া মূল নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থাকা আরও দুজন হলেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণঅধিকার পরিষদের আহ্ববায়ক ড. রেজা কিবরিয়া। জোটের উদ্যোগ নেওয়া এই তিনজন ইতোমধ্যেই দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল, বিএনপি এই জোটে সরাসরি না থাকলেও আগামীর আন্দোলন সংগ্রামে যৌথভাবে এগিয়ে যাবে বলে জানা গেছে। নিজেদের আন্দোলন-সংগ্রামের পদ্ধতি নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য থাকলেও দেশের রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া এই জোটের উদ্দেশ্য এক। সেটি হলো- বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।
ইতোমধ্যে ইফতার পার্টি আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জোটে থাকা সম্ভাব্য দলগুলো কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে। দিনকয়েক আগেও গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ইফতার পার্টিতে বেশ কয়েকটি দলের ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরা একত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়া জামায়াতে ইসলামির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি যখন জামায়াতের সাথে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে, তখন আত্মপ্রকাশের পথে থাকা এই জোটে জামায়াত থাকবে কি-না, সেটা বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে। বাম দলগুলো এ নিয়ে আপত্তি তুললেও জটিলতা কাটাতে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে সঙ্গে নিয়েই রাজপথে লড়াইয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জোটের উদ্যোক্তারা।
নতুন জোটের উদ্যোক্তারা বলছেন- নির্দলীয়, নিরপেক্ষ কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার- যাই বলা হোক না কেন, এ নিয়ে আরো আলোচনার অবকাশ রয়েছে। বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে একটি নির্দলীয় সরকার এসে তিন মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না। এত অল্প সময়ের মধ্যেই কারো পক্ষেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, যারা মনে করে এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তাদের সবার সঙ্গে আমরা কথা বলছি। অনেকগুলো বিষয় নয়, এই একটিমাত্র পয়েন্টের ওপরই আমাদের জোট গঠন করা হবে। আন্দোলন সফল করতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই।