এখন থেকে হিজাব পরিধানে বাধা নেই মিরসরাই জেবি স্কুলে

জাতীয়

নিউজ ডেষ্ক- অবশেষে ছাত্রীরা হিজাব পরিধান করতে পারবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ে। এতদিন চলছিল কর্তৃপক্ষের বানানো নির্দিষ্ট একটি ড্রেসকোড অনুযায়ী। শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া বিনতিহার অভিযোগের ভিত্তিতে হিজাব (স্কার্ফ) যুক্ত করে নতুন ড্রেসকোড ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার (৩০ মার্চ) দৈনিক নয়া দিগন্তের শেষ পৃষ্ঠায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর এদিনই সকাল ১১টায় মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ সমন্বয়ে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের হিজাব সংক্রান্ত বাধানিষেধ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে জেবি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ড্রেসকোডে হিজাব যুক্ত করে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেবি স্কুল ক্যাম্পাসে গেলে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া বিনতিহা স্কার্ফ পরে গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকছিল। এসময় তার সহপাঠীরা তাকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস করছিল। পরে সে স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে অংশ নেয়। শুধু লামিয়া নয়, অনেক ছাত্রীকে হিজাব পরিধান করতে দেখা গেছে।

অ্যাসেম্বলি শেষে প্রথমে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম জামিউল হিকমা, জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর হোসেন মামুন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাস্টারের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়া হিজাব (স্কার্ফ) যুক্ত করে নতুন ড্রেসকোড ঘোষণা দেন। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের নিয়ে স্কুলের শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শন করেন।

ওইদিন হিজাব যুক্ত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন ড্রেসকোড ঘোষণা করার সময় বিদ্যালয়ের প্রায় ১১০০ শিক্ষার্থীর মুহুমুর্হু করতালিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। তাদের চোখে-মুখে আনন্দের চাপ দেখা গেছে। এদিকে প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়া এই প্রতিবেদকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ওসি সাহেবসহ সবার সম্মিলিত বৈঠকে হিজাব-স্কার্ফ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটি আমরা স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশেও ঘোষণা দিয়েছি। আবার নোটিশ আকারেও প্রচার করেছি।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে অ্যাসেম্বলির পর তিন শিক্ষার্থীর হিজাব খুলতে বাধ্য করেন এবং হেনস্থা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়া। পরে শিক্ষার্থী লামিয়া বিনতিহা এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেয়। পরে এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *