‘আকাশ নীল’ নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তাঁরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান এবং পরিচালক ইফতেখাইরুজ্জামান রনি। প্রতারণা ও হুমকির অভিযোগে এক গ্রাহকের করা মামলায় গত রবিবার রাতে ফরিদপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ ও একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আকাশ নীলের অন্যতম কর্ণধার মশিউর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ২০১৯ সালে বন্ধু ইফতেখাইরুজ্জামান রনিকে সঙ্গে নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। এর আগে তিনি গার্মেন্ট থেকে রিজেক্টেড টি-শার্ট/গার্মেন্ট পণ্য এনে নিউ মার্কেট এলাকায় বিক্রি করতেন। এক পর্যায়ে অন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ইভ্যালি’ ও ‘ধামাকা শপিংয়ের’ ব্যবসা দেখে ২০২১ সালের মে মাসে ‘আকাশ নীল’ নামে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করেন।
পরে দুই বন্ধু মিলে অনলাইনে ‘আকাশ নীল’ নামে শুরু করেন শাক-সবজির হোম ডেলিভারির ব্যবসা। তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরের সাত মাসে ছাড়ে মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক পণ্য দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কম্পানিটি। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের কম্পানির নেতৃত্বে আনেন মশিউর। কম্পানিটির এমডি ও সিইও নিজে হলেও চেয়ারম্যান ছিলেন তাঁর মা। আর স্ত্রীকে করেছিলেন কম্পানির শেয়ারহোল্ডার বা অংশীদার। অন্য পদেও ছিলেন আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা। এরপর গ্রাহকের টাকায় শুরু করেন বিলাসী জীবনযাপন।
এক পর্যায়ে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পণ্য না দিয়ে গত নভেম্বরে অফিস বন্ধ করে আকাশ নীলের কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, গত শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় প্রতারণা ও হুমকির অভিযোগে এক গ্রাহক বাদী হয়ে কম্পানিটির ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন।