প্রদীপ-লিয়াকতের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে

জাতীয়

নিউজ ডেষ্ক- সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের নথি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টের ডেসপাস শাখায় এসে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

হাইকোর্টের নিয়ম অনুযায়ী এখন মামলার পেপারবুক তৈরি হবে। পেপারবুক তৈরি হলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী হাইকোর্টে একটি দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন যেখানে মামলার শুনানি হবে। গত ৩১ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল।

রায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়। মামলার আসামি বিতর্কিত ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ মামলায় বাকি ১৩ আসামির মধ্যে ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত ও বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব এবং টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ।

এর আগে ওইদিন দুপুর ২ টায় ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি, বাদীপক্ষের আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীসহ বাদী-বিবাদীদের স্বজন এবং সংশ্লিষ্টরা এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। রায়কে কেন্দ্র করে আদালতের চারপাশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

নির্মম ও আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ১৮ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা হয়। বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে মাত্র ৩৩ কার্যদিবসে শেষ হয় মামলাটির পরবর্তী কাজ। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৃষ্টির ৩৮ বছরের ইতিহাসে প্রথম এত দ্রুত কোনো হত্যা মামলার রায় হয়। এর আগে হত্যা কিংবা ফৌজদারি কোনো মামলায় এত বিপুল সংখ্যক সাক্ষী নেওয়ার নজিরও নেই।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *