নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ ২০ দিন পর চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক মোহসীন আলী (২২) হত্যারহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২ ফেব্রুয়ারী নিহতের বন্ধু উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন জিয়া (৩৫) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সান্তাহার ইয়ার্ড কলোনির ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী শ্রী প্রদীপ চন্দ্রকে (৩০) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
নিহত মহসীন আলী উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের আতুড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম বলেন, ‘গত ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে মোহসিন ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু কোনো খোঁজ না পেয়ে পরদিন মহাদেবপুর থানায় তাঁর বোন মর্জিনা বেগম একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ৮ দিন পর ২১ জানুয়ারি উপজেলার মহিষবাথান মোড় এলাকায় একটি হলুদ খেতে তার অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এরপর মর্জিনা বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মহাদেবপুর থানা পুলিশ স্থানীয় সোর্স ও তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে গত বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) নিহত মহসীনের বন্ধু সাখাওয়াত হোসেনকে আটক করলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার কাছ থেকে মহসীনের ব্যবহৃত মোবাইলফোনও উদ্ধার করা হয়। সে জানায়, মাস দুয়েক আগে সাখাওয়াতের কাছ থেকে মহসীন তিন হাজার টাকা ধার নিয়ে পরে এক হাজার টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু বাকি দুই হাজার টাকা না দেয়ায় তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে এবং মহসীনের ব্যবহৃত চার্জারভ্যান নিয়ে গিয়ে সান্তাহারে বিক্রি করে। তার দেওয়া তথ্যমতে সান্তাহার গিয়ে চার্জার ভ্যানটির খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করা হয়। আলামত নষ্ট করার দায়ে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী প্রদীপ চন্দ্রকেও আটক করা হয়’।
মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন আহমেদ জানান, এসআই জয় দাস মামলাটি তদন্ত করেন। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আসামি সাখাওয়াত হোসেন ওরফে জিয়া হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে নওগাঁর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।