নিউজ ডেষ্ক- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় চুরির অভিযোগ তুলে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে সাদ্দাম হোসেন (২২) নামে এক যুবককে নির্যাতন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার হাফিজ মোড়ে শেখ ট্রেডার্স নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ওই ঘটনা ঘটে।
ওই যুবকের নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাদ্দামকে উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ। নির্যাতনের শিকার সাদ্দাম হোসেন আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার থানাপাড়ার আকমল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার হাফিজ মোড়ে শেখ ট্রেডার্সের মালিক ব্যবসায়ী শেখ আমানুল্লাহর বিভিন্ন পণ্যের ডিলারসিপ আছে। মঙ্গলবার দুপুরে একটি গাড়িতে অর্ডারের পণ্য আনলোড চলছিল। এসময় সাদ্দাম হোসেন ওই গাড়ি থেকে নুডলস ও কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে ধাওয়া করে ধরে আমানুল্লাহর কাছে হস্থান্তর করে। পরে আমানুল্লাহ প্রকাশ্যে দোকানের খুঁটিতে সাদ্দামের দুই হাত বেঁধে একটি পাইপ দিয়ে মারধর করেন।
তার সামনে ২০ থেকে ৩০ জন লোক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। স্থানীয়রা বলেন, যত বড়ই অপরাধী হোক না কেন এভাবে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন তিনি। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমানুল্লাহর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
ব্যবসায়ী শেখ আমানুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন সময় আমার প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটতো। এতে আমি অতিষ্ঠ ছিলাম। কিছুতেই চোর ধরতে পারতাম না। আজ কিছু নারিকেল তেল ও নুডলসের প্যাকেট চুরির সময় হাতেহাতে ধরে স্থানীয়রা আমার কাছে নিয়ে আসে। তবে তাকে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা আমার অন্যায় হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার বলেন, ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে এটা বড় অপরাধের মধ্যে পড়ে। যত অপরাধই করুন না কেন কেউ নিজ হাতে আইন তুলে নিতে পারেন না। তাকে অবশ্যই আইনের কাছে সোপর্দ করতে হবে। নির্যাতনের শিকার ওই যুবক বা তার পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে মানবতা ফাউন্ডেশন থেকে তাকে বিন্যামূল্যে তার সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে সাদ্দামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নির্যানতের বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। পরে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও দেখেছি। চুরির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি থানায়। নির্যাতনের ঘটনায় সাদ্দাম বা তার পরিবার অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। রাতেই শেখ আমানুল্লাহকে পুলিশ জিজ্ঞাসাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়েছে।