নিউজ ডেষ্ক- ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও এর পরের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির জন্য নৌযানটির মাস্টার, সারেং, সুকানিসহ সব স্টাফদেরকেই দুষছেন বেঁচে ফেরা যাত্রীরা। ভয়াবহ এ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তারা বলেন, “আগুন লাগার পরও দীর্ঘ সময় লঞ্চটি চালানো হয় বলে জানা যায়। যার ফলে এত প্রাণ ঝরেছে।”
যাত্রীদের অভিযোগ, আগুন লাগার পরও লঞ্চ না থামিয়ে ৩০-৪০ মিনিট চালিয়ে নদীর পাড়ে নিয়ে থামান লঞ্চের মাস্টার। কিন্তু আগুন লাগার সাথে সাথে যাত্রীদের ঝুঁকিতে ফেলে লঞ্চের মাস্টার, সারেং, সুকানিসহ সব স্টাফ পালিয়ে যান। আর ওই সময় কয়েকশ’যাত্রী নামতে পারলেও লঞ্চে থেকে যান ঘুমিয়ে থাকা যাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেসার্স নেভিগেশন কোম্পানির এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটির ধারণ ক্ষমতা ছিলো দিনে ৭৬০ জন। তবে রাতে তা কমে দাঁড়ায় ৪২০ জনে। এছাড়া লঞ্চটির লাইসেন্সের মেয়াদও ছিল ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চটি ২৫ জন স্টাফসহ ৩১০ জনের ভয়েস ক্লিয়ারেন্স দিয়ে টার্মিনাল ত্যাগ করে চলে যান।
বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান, ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার সময়ই লঞ্চে লোক ভর্তি ছিল। এরপর চাঁদপুরে থামালে সেখানে থেকে এতো পরিমাণ লোক উঠে যে, তিল ধারণের ঠাঁইও ছিল না লঞ্চটিতে। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া এলাকায় সুগন্ধা নদীতে পৌঁছালে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুন ধরে যায়। এ সময় কেবিন ও ডেকের বেশিরভাগ যাত্রীরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চটি পরিদর্শন করতে যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগুনের পুরো লঞ্চ পুড়ে যাওয়ার পেছনে যে কোনো রহস্য থাকতে পারে। নয় তো এভাবে দ্বিতীয় ঘটনা আর বাংলাদেশে আগে ঘটেনি। ইতিমধ্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একজন যুগ্মসচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিবো।