‘পড়া না পাড়ায় হুজুর আমারে পিডাইয়া হাত ভাইঙ্গা দিছে’

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক- বরগুনার আমতলীতে দারুল আরকাম মডেল মাদরাসায় অধ্যয়নরত আবদুল্লাহ (৬) নামে এক নুরানী শাখার ছাত্রকে পড়া না পাড়ার কারণে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষক। এরপর ৪ দিন যাবৎ কোনো চিকিৎসা না দিয়ে মাদরাসায় আটকে রাখেন ওই শিক্ষক।

গত ৯ ডিসেম্বর বিকেলে মাদরাসার নুরানী শাখার শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবু আক্কাস আলী। ক্লাসে পড়া বলতে না পারায় ছাত্র আবদুল্লাকে প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটান ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। লাঠি দিয়ে পেটানোর সময় শিশু আবদুল্লাহ চিৎকার করে কান্না শুরু করলে এতে আরো ক্ষিপ্ত হন ওই মাদরাসা শিক্ষক। এসময় তিনি আবদুল্লাহকে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে তার বাম হাতের জোরা ছুটিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় আবদুল্লাহকে কোনো প্রকার চিকিৎসা না করিয়ে এবং তার অভিভাবককে না জানিয়ে গত চার দিন ধরে মাদরাসার একটি কক্ষে ছাত্রকে আটকে রাখেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। গত চার দিন ধরে আবদুল্লাহ হাতের প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতরালেও শিক্ষক তার কোনো চিকিৎসা এবং খোঁজ-খবরও নেননি।

গতকাল (সোমবার) সকালে আবদুল্লাহর মা ছেলেকে দেখতে মাদরাসায় আসলে ছেলেটি তার মায়ের সামনে কান্না শুরু করে দেয় এবং তার হাত ব্যথায় নারাতে পারছে না বলে মাকে জানায়।

মা তখন নিরুপায় হয়ে ছেলেকে দ্রুত আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে তার হাতের এক্সরে করে দেখতে পান বাম হাতের জয়েন্ট সরে গেছে।

শিশু আবদুল্লাহ জানায়, “পড়া না পাড়ায় হুজুর আমারে পিডাইয়া হাত ভাইঙ্গা দিছে। এরপর আমারে কোনো ওষুধও খাওয়ান নাই তিনি। বাড়িতেও যাইতে দেয় নাই।”

এ ব‍িষয়ে ওই মাদরাসার অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবু আক্কাস আলী বলেন, “পড়া না পাড়ায় সামান্য ২/১টি চর থাপ্পড় দিয়েছি। ডাস্টার দিয়ে হাত ভাঙার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। মারধরের পর গত চার দিন আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি।”

এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, হাত ভাঙা বাচ্চাসহ একজন মহিলা থানায় এসেছিল। মৌখিকভাবে সে মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার ছেলেকে পিটিয়ে হাত ভাঙার বিষয়ে জানিয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *