নিউজ ডেষ্ক- এবার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বরগুনার তালতলীতে নিজের বাবার কবর ভাঙচুর করেছেন আলম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি। গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় তালতলীর মালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, তালতলীর বড়বগী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের নসু হাওলাদার প্রায় ৩০ বছর আগে মারা যান। তার মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া জমিজমার মালিক হয় তিন ভাই ও চার বোন। এই জমি নিয়ে বড় ভাই আলম হাওলাদারের সঙ্গে অন্য ভাই-বোনদের বিরোধ চলে আসছে।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী সব ভাই-বোনদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বড় ভাই আলম তাতে রাজি হননি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ভিটে বাড়ির জমি ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় বড় ভাই আলমের আপত্তির কারণে কৃষি জমি ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এরপর থেকে বিভিন্ন সময় কৃষি জমি দখল করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এছাড়া আলমের বাবা বেঁচে থাকতে চিকিৎসা করানোর কথা বলে তিনি বরিশালে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বেশিরভাগ জমি লিখে নেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে অন্য দুই ভাইকে এলাকাছাড়া করেন তিনি। তবে বোনেরা বাবার জমিজমার ভাগ চাইলে তাদের ছেলে মেয়েদেরও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন তিনি।
এ ঘটনার জেরে গত ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে মেজো বোন পারুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে আলম হাওলাদার তার বাবার কবরটি ভাঙচুর করেন। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, বেশি সন্তান কেন জন্ম দিল, আমাকে একা কেন জন্ম দিল না?
এ বিষয়ে আলম হাওলাদারের মেজো বোন পারুল বলেন, আমি আমার বাবার সম্পত্তির ভাগ চাইতে গেলে আমার ভাই (আলম) আমাকে লাথি মেরে ফেলে দেন। বাবা কেন বেশি সন্তান জন্ম দিলেন, এ অপরাধে তার কবরে জুতা দিয়ে পেটায়। পরে বড় হাতুড়ি দিয়ে কবরটি ভাঙচুর করে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত আলম হাওলাদার বলেন, আমাদের জমিজমা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। বাবার কবর ভেঙে ফেলেছি এটা সত্য। তবে বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার কোনো কথা আমি বলিনি। এটা আমার বোনেরা বানিয়ে বলছে। আমার বোনেরা জমি যা পাবে তার চেয়ে বেশি দখল করে রেখেছে।
এ বিষয়ে তালতলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।