দামে খুশি চাষিরা, লটকনের বাম্পার ফলন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়!

দেশজুড়ে breaking subled

নিউজ ডেষ্ক- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দেশি-বিদেশি অনেক ধরনের ফলেরই বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশে একসময় অপ্রচলিত ফলের তালিকায় ছিল লটকন। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরেও বাণিজ্যিকভাবে লটকনের চাষ হচ্ছে। এই উপজেলার মাটি ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উন্নত জাতের সুমিষ্ট লটকনের চাষ বৃদ্ধির সাথে সাথে এর জনপ্রিয়তাও বেশ বেড়েছে।

এবছর বিজয়নগর উপজেলার প্রায় ১৮ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ করা হয়েছে। লটকনের বিক্রিও শুরু হয়েছে। পাইকারি দরে ৭০-৮০ টাকা কেজি লটকন বিক্রি হচ্ছে। লটকনের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিরা খুশি। চাহিদা ও দাম ভালো হওয়ায় লটকনের চাষ নিয়ে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। এবছর বিজয়নগরের প্রায় কোটি টাকার লটকন বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা যায়, বিজয়নগরের ১৮ হেক্টর লটকন বাগানের মধ্যে ১০ হেক্টর বাগানই উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে।
পাহাড়পুর ইউনিয়নের বামুটিয়া গ্রামের লকটন চাষি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, লটকনের পাশাপাশি মাল্টা, কমলা, লিচু, পেঁপে, কাঁঠাল, এমনকি সৌদি আরবের খেজুরও রয়েছে তার বাগানে।

চাষি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, লটকন চাষ করা সহজ হলেও লটকনের চারা লাগানোর সময় ভালো জায়গা নির্বাচন করতে হয়। ছায়াযুক্ত শুকনো জায়গায় লটকন গাছ লাগাতে হয়। অযত্ন অবহেলায়ও বেড়ে উঠে গাছ। ভালো করে যত্ন নিলে লটকনের বাম্পার ফলন হয়।

উপজেলার সেজামুড়া গ্রামের লকটন চাষি আবদুল হাসিমের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লটকন ধরে আছে। এবছর লটকনের বাম্পার ফলন হওয়ায় তিনি খুব খুশি।

আবদুল হাসিম বলেন, আমার বাগানে প্রায় ১০০ লটকন গাছ আছে। লটকন বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। পাইকাররা এসে লটকন নিয়ে যায়। এ পর্যন্ত ২০-২৫ হাজার টাকার লটকন বিক্রি করেছি। স্থানীয় বাজারের পাইকার ও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা বাগানে আসেন লটকন কিনতে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, লটকনের রয়েছে পুষ্টি ও ওষুধি গুণ। ভিটামিন ‘সি’তে ভরপুর এই ফলে। বাংলাদেশে লটকন এলাকাভেদে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন হাড় ফাটা, ভুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, লোটকা ইত্যাদি।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, বিজয়নগরের মাটির গুণ খুব ভালো। এখানে সব ধরনের ফলের ভালো ফলন হয়। কয়েক বছর ধরে চাষিরা লটকন চাষে ঝুঁকছেন। এবছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় ১৮ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ২ থেকে আড়াই শত লটকনের চারা লাগানো যায়। একটি পূর্ণাঙ্গ গাছে ৮০-১০০ কেজি লটকন পাওয়া যায়। আমরা চাষিদের বাগান আরো করার বৃদ্ধির পরামর্শ দিচ্ছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মুন্সী তোফায়েল হোসেন বলেন, বিজয়নগর ফল চাষের উর্বর জায়গা। বিভিন্ন জাতের ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। প্রতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি করা হয়। আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগীতা করি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *