নিউজ ডেষ্ক- শ্রাবণ (মধ্য জুলাই-মধ্য আগস্ট) এ সময়ের মধ্যে বেশকিছু সবজির বীজ বপন করা যায়। সঠিক সময়ে বীজ বপনের মাধ্যমে কৃষিতে সফলতা নিশ্চিত করা সম্ভব। শ্রাবন মাসে কি কি সবজি চাষ করবেন তা জানা প্রয়োজন:-
শাকসবজি চাষের জন্য প্রথম ও প্রধান কাজগুলোর একটি হলো কোন স্থানে কোন সবজির চাষ হবে ও তার জন্য উপযুক্ত মাটি তৈরি। ২ভাগ জৈব সার (গোবর/ কম্পোস্ট/ ভার্মি কম্পোস্ট), ১ ভাগ কোকোডাস্ট ও ১ ভাগ উর্বর দোআঁশ মাটি মিশিয়ে চারার উপযোগী মাটি তৈরি করে নিতে হবে। মাটি বেশ মিহি, ঝুরঝুরে ও সমতল ভাবে তৈরি করতে হবে। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। পর্যাপ্ত জৈব সারের পাশাপাশি পরিমিত মাত্রায় রাসায়নিক সার দিতে পারেন।
আগাম রবি (শীতকালীন) সবজি যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, শিম, টমেটো, বেগুন এর বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন শুরু করতে পারেন।
ছাদবাগানে ড্রাম বা টবে বা বেডে ভালোভাবে মাটি তৈরি করে সরাসরি বীজ বপন করে লালশাক, পালংশাক, পুইশাক চাষ করতে পারেন। প্যাকেটে/ ছোট টবে/ সীডলিংট্রে(seedling tray)তে এগুলোর চারা তৈরি করে নিতে পারেন।
বেড/ টব / কাটা ড্রাম প্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম সরিষার খৈল, ২ কেজি ছাই, ১০০ গ্রাম টিএসপি ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। প্রতি বেডে/ ড্রামে/ টবে ৩/৪টি ভাল সবল বীজ রোপণ করতে হবে। চারা যদি আগেই তৈরি করা থাকে বা নার্সারি থেকে ৩০-৩৫ দিন বয়সী সুস্থ সবল চারা মাদা/ বেড/ ড্রামে/টবে রোপণ করতে হবে।
বেশি ঘন করে চারা লাগালে তা আলো, বাতাস, পানি ও মাটিস্থ পুষ্টি গ্রহণের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয় তাই প্রত্যেকটি চারা সমনির্দিষ্ট দূরত্বে লাগাতে হবে। লতানো সবজি চারা লাগানোর পর গাছগুলো বড় হতে থাকলে মাচা তৈরি করে দিবেন।
লতানো সবজির দৈহিক বৃদ্ধি তথা- কান্ড, পাতা, শাখা-প্রশাখা যত বেশি হয় , তার ফুল ফল ধারণ ক্ষমতা তত কমে হয়। তাই ১৫-২০% লতা-পাতা কেটে দিতে হবে। তাহলে, গাছে দ্রুত ফুল ও ফল ধরবে।
কুমড়া গোত্রের সবজির শত ভাগ পরাগায়ন ও অধিক ফলন নিশ্চিত করতে, হাত-পরাগায়ন অপরিহার্য। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন ভোরবেলা হাতপরাগায়ন নিশ্চিত করলে ফলন অনেক বেড়ে যাবে।
টমেটো চাষে পলিথিনের ছাওনির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ১ লিটার পানিতে ২০ মিলি টমেটোটোন নামক হরমোন মিশিয়ে ফুল আসার পর ফুলের গায়ে ৫-৭ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করলে অধিক ফলন নিশ্চিত।
পূর্ববর্তী মাসের কুমড়াজাতীয় সবজি ফসল- করলা, পটল, কাঁকরোল, চিচিঙা, ঝিঙা, ধুন্দুল, শসা, এবং বেগুন, টমেটো, ঢেঁড়স, কাচামরিচ ইত্যাদির পরিচর্যা করবেন। পরিচর্যার পাশাপাশি খরিফ-২ বা নাবী গ্রীষ্মকালীন সবজি ফসল উঠানো বা সংগ্রহ করতে হবে।
লেমনগ্রাস, থানকুনি, পুদিনা, তুলসি ইত্যাদি খুব সহজে চাষ করতে পারেন। আগাম রবি সবজি যেমন বাঁধাকপি, ফলকপি, লাউ, টমেটো, বেগুনের বীজতলা তৈরি, বীজবপন শুরু করা যেতে পারে। খরিফ-২ এর সবজি উঠানো ও পোকামাকড় দমন করতে হবে। শিমের বীজবপন, লালশাক ও পালংশাকের বীজবপন করতে হবে। রোপণকৃত ফলের চারার পরিচর্যা, উন্নত চারা/কলম রোপণ, খুঁটি দেয়া, খাঁচি বা বেড়া দেয়া, ফলন্ত গাছের ফল সংগ্রহ করতে হবে।