নিউজ ডেষ্ক- পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভা আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকার। প্রায় দশ লক্ষ মানুষ এ সভাস্থলে বসতে পারবে ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ। সেখানে ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সভায় দাওয়াত করা হয়েছে অনেককেই। আমন্ত্রণ পেয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তবে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজ থেকে এক স্ট্যাটাসে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
ঢাবির সাবেক ভিপি নুরল হক নুর লিখেছেন, আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করায় সরকারকে ধন্যবাদ। পদ্মা সেতু নিঃসন্দেহে দেশের অবকাঠামো খাতের বড় একটি উন্নয়ন প্রকল্প। বর্তমান সরকারের আমলে এটি সম্পন্ন হয়েছে, সরকারের একটি কৃতিত্ব রয়েছে। তিনি আরও লিখেছেন, একইসাথে এটিও বলতে হবে বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতি-লুটপাট, দেশের টাকা বিদেশে পাচারও সমান হারে বেড়েছে। ভিন্নমতের দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা, গুম-খুনের কর্তৃত্ববাদী আচরণের মধ্যে সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী, ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণকে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।
এ সময় সরকারের সমোলচনা করে তিনি বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, উত্তরাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষকে পানির নিচে খাদ্যাভাবে হাহাকারে রেখে শত শত কোটি টাকা খরচ করে এ সময়ে ১০ লাখ লোক জড় করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের উল্লাস নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য মনে হয় না। তাই এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিনি।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নুর বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি দাওয়াত পেয়েছি। তবে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ঠিকঠাক খাবার পাচ্ছে না, ঘরে চুলা জ্বলছে না। এমন সময় শত শত কোটি টাকা খরচ করে উল্লাস করা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। তাই আমি ব্যাক্তিগতভাবে এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে যেতেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে নুর বলেন, পরিস্থিতি ভালো থাকলে হয়ত বিবেচনা করতাম। কারণ এ পদ্মা সেতুতে আমার টাকাও আছে, আপনার টাকাও আছে। আর আমি মনে করি, এটি বাংলাদেশের বড় অর্জন। সেক্ষেত্রে সরকার ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে একইসঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে সমহারে লুটপাট-দুর্নীতি এসবের বিচারও একদিন হবে। কিন্তু তাই বলে এ সমস্ত ভালো কাজকে তো আমরা অস্বীকার করতে পারি না।