১ নম্বর সতর্কতা সংকেত, অগ্রসর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক-বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শনিবার (৭ মে) দুপুরে এটি লঘুচাপ ও গভীর নিম্নচাপ পর্যায় সম্পন্ন করে পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এর প্রভাবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সব সমুদ্র বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ দুপুর ১২টার দিকে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১ দশমিক ৩ ডিগ্রী দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছিল। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে।

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়টি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির সাংবাদিকদের জানান, এটির গতি আপাতত উত্তর-পশ্চিম দিকে আছে।

সে অনুযায়ী এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১০ থেকে ১২ মের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়টি।

আবহাওয়াবিদ ও গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে সমুদ্রপৃষ্ঠে ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। দমকা হাওয়া সহ এটি ঘণ্টায় প্রায় ৯৩ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়েছে। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টি কলকাতা বন্দর থেকে প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।

তিনি জানান, সোমবারের আগে নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না এটি কোন স্থানের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি হতে পারে সোমবার থেকে। আবহাওয়া পূর্বাভাসের মডেল অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১০ মে) থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হবে। এর পরদিন থেকে বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের জেলাগুলো এবং ১৩ মে সারাদেশে বৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, ১৩ ও ১৪ মে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ১০ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।

একাধিক তথ্য-উপাত্ত বলছে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হবে কক্সবাজার জেলায়। এমনটা ঘটলে কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ভূমিধ্বস হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ আবহাওয়া্বিদ এ একে এম নাজমুল হক জানান, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে দু-এক জায়গায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া দফতর জানায়, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে সেই ঘূর্ণিঝড়টি ১০-মে’র মধ্যে।

তবে স্থলভাগে আছড়ে পড়লে ঘূর্ণিঝড়টি কোন রাস্তা দিয়ে যাবে এবং কেমন ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, সে বিষয়ে আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে কিছু জানায়নি। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়লে সেটি ওড়িশার কেন্দাপাড়া, ভদ্রক, জাজপুর, বালাসোর, মযূরভঞ্জ এবং কেওনঝড়ে আঘাত করতে পারে বলে আশঙ্কা।

ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়লে বিহার, ঝাড়খণ্ডে তুমুল বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা। ৩-৪ দিন ধরে ওই রাজ্যগুলিতে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। কেরল তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং পুদুচেরিতে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *