নিউজ ডেষ্ক- ঢাকা থেকে ফেরি পার হয়ে বরগুনা পৌঁছতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টার বেশি। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় বরগুনা আসা যেত। এখন আবার সেই আগের মতোই সময় লাগছে। এর কারণ বরগুনা-বাকেরগঞ্জ-বরিশাল সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস চলাচল এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
বাধ্য হয়ে এই পথের বাসগুলো পটুয়াখালীর সুবিদখালী ও আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনায় চলাচল করছে। এতে পদ্মা সেতুর সুফল কাজে লাগাতে পারছে না দক্ষিণের এই জেলার মানুষ। ঘুরপথে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তিন-চার ঘণ্টা বেশি লাগছে।
গাড়ি চলাচলে বাধার দেওয়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে বরগুনা সদর, বেতাগী, তালতলী, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চলাচল করা দূরপাল্লার গাড়িগুলোর যাত্রীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা-বরগুনা রুটের এক বাসচালক বলেন, রুট পারমিট নেই, এটা কথিত অজুহাত। বাকেরগঞ্জ থেকে বরগুনার দিকে আসা ঢাকার বাসগুলোকে চলাচলে বাধা দেওয়ার কারণ হলো এই পথে বরিশাল-বরগুনা লোকাল বাসগুলোতে যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়া। তারা ঢাকার বাসগুলোকে দায়ী করছে। বাধা পেয়ে আমতলীর ফেরি পার হতে হয়। এতে বাড়তি দুই হাজার টাকা খরচ হয় এবং তিন-চার ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে রোড পারমিট দিতে হলে সড়ক যে পরিমাণ প্রশস্ত থাকা প্রয়োজন, সেটি নেই এখানে। এ কারণে ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচল করা বাসগুলোকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
এরই মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে এই জেলা সড়ককে আঞ্চলিক সড়কে রূপান্তরিত করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রতি বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বরিশালের রূপাতলী বাস মালিক সমিতির মালিক ও শ্রমিকরা।
ফলে বাসগুলো পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ এবং বরগুনা জেলার আমতলী ফেরি পার হয়ে যাওয়া-আসা করছে। এতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ঢাকামুখী যাত্রীরা।
গোলাম হায়দার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সুফল থেকে এখন আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। ’ আরেক যাত্রী লাভলী বেগম বলেন, ‘ছোট বাচ্চা নিয়ে বাসে ঢাকা থেকে বরগুনা এসেছি। ফেরি পার হয়ে বরগুনা আসতে লেগেছে ১০ ঘণ্টারও বেশি। অথচ কয়েক দিন আগে আমি বাসে মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় বরগুনা থেকে ঢাকাতে পৌঁছে গেছি। ’
বরিশালের রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, তাদের রুট পারমিট আছে এক পথে, তারা যাবে অন্য পথে, এটা তো ঠিক নয়। বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি বিভাগীয় প্রশাসককে জানিয়েছি। ’
বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘বরগুনা-বাকেরগঞ্জ ৫৭ কিলোমিটার সড়কটি জেলা সড়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। ছয় থেকে সাত মাস আগে একে আঞ্চলিক সড়কে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এটা করা হবে। ’