১০৮ রানে অলআউট উইন্ডিজ, মিরাজের শিকার ৪ উইকেট

খেলা

নিউজ ডেষ্ক- বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটাররা। সফরকারী স্পিনারদের সামনে খেই হারিয়ে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন তারা। শুরু থেকে ভুগতে থাকা দলটি একবারের জন্যও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। স্কোরবোর্ডেই যার প্রমাণ। নাসুম আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজদের ঘূর্ণির সামনে কোনোমতে ১০০ পার করেছে স্কোর।

বুধবার গায়ানায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে লণ্ডভণ্ড ক্যারিবিয়ানরা। ব্যাট হাতে সামান্য প্রতিরোধও গড়তে পারেনি তারা। ৩৫ ওভারে অলআউট হয়েছে মাত্র ১০৮ রানে।

তাসকিন আহমেদের জায়গায় সুযোগ হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেনের। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ে অবদান রাখতে পারবেন, এই আস্থাতেই একাদশে জায়গা হয়েছে এই অলরাউন্ডারের। বোলিংয়ে অবদান তিনি শুরুতেই রাখলেন। এই অফ স্পিনারের হাত ধরেই প্রথম উইকেটে এসেছে বাংলাদেশের। এরপর নাসুম আহমেদের ভেল্কিতে দুর্দান্ত শুরু পায় তামিম ইকবালরা।

বাংলাদেশকে শুরুতেই সাফল্য এনে দেন মোসাদ্দেক। উইকেট না হারালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ছিল মন্থর। বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল দুই ওপেনার শাই হোপ ও কাইল মায়ার্সকে। রান খুব বেশি তুলতে না পারলেও উইকেট আগলে রাখছিলেন তারা। অবশেষে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন মোসাদ্দেক। মায়ার্সকে সরাসরি বোল্ড করে এনে দেন প্রথম উইকেট।

অফ স্টাম্প বরাবর মোসাদ্দেকের গুড লেংথ বল মায়ার্স ফ্রন্ট ফুটে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি, বল আঘাত করে স্টাম্পে। প্রথম ওয়ানডেতেও এই ব্যাটার একইভাবে আউট হয়েছিলেন। সেবার বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ থাকলেও এবার মোসাদ্দেক। মায়ার্সের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।

মোসাদ্দেকের এনে দেওয়া উইকেট উৎসব টেনে নেন নাসুম আহমেদ। আগের ম্যাচেই ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছে তার। টি-টোয়েন্টিতে নিজের সামর্থ্যের জানান আগেই দিয়েছেন। ৫০ ওভার ক্রিকেটেও ছাপ রাখছেন বাঁহাতি স্পিনার। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার ভেল্কিতেই এলোমেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এই বাঁহাতি স্পিনার একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে ভেঙে দেন ক্যারিবিয়াদের টপ অর্ডার। শামারাহ ব্রুকসকে দিয়ে তার উইকেট আনন্দ শুরু। ওয়ান ডাউনে নামা এই ব্যাটারকে ক্লিন বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফেরান। যাওয়ার আগে ১৩ বলে করেন মাত্র ৫ রান। এরপর ছেঁটে ফেলেন শাই হোপকে। স্বাগতিক ওপেনার একপ্রান্ত আগলে রেখে আশা জাগালেও সেটা বেশিক্ষণ টিকেনি। নাসুমের ভেল্কিতে তিনি কুপোকাত। এই উইকেটকিপার ব্যাটার মোসাদ্দেককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৮ রানে। ৪৫ বলের ইনিংসে মেরেছেন মাত্র একটি বাউন্ডারি।

১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেট নেওয়ার এক বল পরই আবার উইকেট নাসুমের। এবার তার শিকার অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে তো রানের খাতাই খুলতে দেননি। মুখোমুখি প্রথম বলেই ক্লিন বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান পুরান। তাতে ৪৫ রানে ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

পুরানের বিদায়ে সবচেয়ে বড় আঘাত লাগে। শুরু থেকে সংগ্রাম করলেও অধিনায়ক হিসেবে তার কাছে বাড়তি চাওয়া ছিল দলের। কিন্তু তিনি আউট হওয়ার পর হয়েছে আসা-যাওয়ার মিছিল। রোভম্যান পাওয়েলের ‘ওয়ানডে খেলোয়াড়’ হতে যে আরও সময় দরকার, সেটা আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ডানহাতি ব্যাটার শরিফুল ইসলামের বলে ১৩ রান করে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হয়ে। এমনিতেই বাংলাদেশের বোলারদের দাপট চলছিল, তার ওপর আবার উইকেট ‘উপহার’ দেয় স্বাগতিকরা। ২ রান করে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আকিল হোসেন।

পরের ৩ উইকেট মিরাজের। আগের ম্যাচে আলো ছড়ানো এই স্পিনার এই ম্যাচেও ছিলেন দুর্দান্ত। তার ঘূর্ণিতে কাটা পড়েন রোমারিও শেফার্ড (৪), আলজারি জোসেফ (০) ও গুদাকেশ মোতি (৬)। তাদের ব্যর্থতার মাঝে একপ্রান্ত আগলে ছিলেন কিমো পল। এই ব্যাটার খেলেছেন দলীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংস। ২৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৪ বাউন্ডারিতে।

বাংলাদেশের বোলারদের দিনে সবচেয়ে সফল মিরাজ। ৮ ওভারে এক মেডেনসহ ২৯ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪ উইকেট। টপ অর্ডার ভেঙে দেওয়া নাসুম ১০ ওভারে ৪ মেডেনসহ মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। আর একটি করে উইকেট মোসাদ্দেক ও শরিফুল ইসলামের।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *