নিউজ ডেষ্ক- বছর সাতেক আগে শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে কয়েকশ ফুট গভীর পাইপের মধ্যে পড়ে শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশ। এবার সেই একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মরক্কোয়। উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চার বছরের এক শিশু ১০০ ফুটের বেশি গভীর কুয়ায় পড়ে গেছে। চারদিন আগে পড়লেও তাকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শিশুটিকে জীবিত তুলে আনতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদগুলোতে শিশুটিকে উদ্ধার অভিযানের খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হচ্ছে। সবাই জানতে উন্মুখ, সে বেঁচে রয়েছে তো!
জানা যায়, চার বছর বয়সী শিশুটির নাম রায়ান। সে গত মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে মরক্কোর চেফচাওয়েন প্রদেশের ইঘরান গ্রামে নিজেদের বাড়ির কাছে একটি গভীর কুয়ায় পড়ে যায়।
শিশুটির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত নয়। তবে লে৩৬০ নামে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শিশুটিকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেখা গেছে এবং কুয়ার মধ্যে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
রায়ানের অবস্থা দেখতে কুয়ার গভীরে ক্যামেরা নামানো হয়েছিল। তাতে শিশুটিকে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দুর্ঘটনাকবলিত শিশুটিকে উদ্ধারে মরক্কোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মেডিক্যাল কর্মীরা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধারের পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে পাশে একটি হেলিক্প্টার দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।
রায়ানকে বের করতে কুয়ার পাশে প্রায় সমান গভীর আরেকটি গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। তবে শুক্রবার গর্তটিতে মাটি পড়ে উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা পিছিয়ে যায়।
কুয়ার মুখ খোলা থাকায় শিশুটি পড়ে গিয়েছিল বলে জানা গেছে। রায়ানের বাবা জানিয়েছেন, তিনি কুয়া মেরামত করছিলেন। এসময় ছেলে তার সঙ্গে ছিল। তিনি বলেন, রায়ান ঠিক আমার পাশেই ছিল। সে যে কখন পড়ে গেছে, বুঝতেই পারেননি।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকার শাহজাহানপুর রেল কলোনিতে খোলা থাকা কয়েকশ ফুট গভীর একটি নলকূপের পাইপে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ক্যামেরা নামিয়েও ফায়ার সার্ভিস কোনো মানুষের ছবি না পাওয়ায় পাইপে জিহাদের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। এরপর উদ্ধার অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। এর কয়েক মিনিট পর কয়েকজন তরুণের তত্পরতায় তৈরি করা যন্ত্রে পাইপের নিচ থেকে উঠে আসে অচেতন জিহাদ। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় দেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে দায়িত্বে অবহেলার কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা দিতে বলা হয়।