নিউজ ডেষ্ক- হিজাব ইস্যুতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের কর্ণাটক। হিজাব পরে কয়েকজন ছাত্রীকে স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া নিয়ে সেখানে সৃষ্টি হয় বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতির। ক্লাসে ছাত্রী হিজাব পরতে পারবে কী না, তার সমাধানে কর্ণাটক হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন কর্ণাটক সরকারি কলেজের পাঁচ ছাত্রী। কিন্তু হাইকোর্টও এ ব্যাপারে কোনো সমাধানে আসতে পারেননি। বিষয়টি সমাধানের ভার প্রধান বিচারপতির হাতেই ছেড়ে দিয়েছিলেন কর্ণাটক হাইকোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা এই নিয়ে মুখ খুলেছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। কর্ণাটকের উডুপি জেলার কুন্দাপুরার সরকারি পিইউ কলেজের ছাত্রী ফতিমা বুশরা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে জানান, হিজাবে নিষেধাজ্ঞার কারণে তার মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে।
ওই পিটিশিনের দ্রুত শুনানির আর্জি করেন প্রবীণ আইনজীবী ও কংগ্রেসে নেতা কপিল সিব্বল। তবে সুপ্রিম কোর্টও ওই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তিনি ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার সামনে এ নিয়ে একটি জরুরি আর্জি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন , কর্ণাটকে যা ঘটছে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। রমনা আরও বলেন, অপেক্ষা করুন। হাইকোর্টকে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। আপনি কী চান বিষয়টি স্থানান্তর করা হোক?
তখন সিবাল পরামর্শ দিয়েছিলেন যে বিষয়টি তালিকাভুক্ত করা হবে এবং আপাতত এটিতে কোনো আদেশ দেওয়া হবে না। তখন আদালত জানান, এখন সমস্যা হল যদি আমরা বিষয়টি তালিকাভুক্ত করি, তাহলে হাইকোর্ট কখনোই শুনবে না। এক বা দুই দিন অপেক্ষা করুন। তিন বিচারপতির বেঞ্চ এটা শুনবে।
এর পরেই সিবাল আর্জি জানান, আর দুই মাস পরই পরীক্ষা। তার আগে এসব চললে সমস্যায় পড়বে শিক্ষার্থীরা। তাই সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত মামলাটি শুনলে উপকৃত হবেন। বিষয়টি আমলে নেননি প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, এত আগে এই মামলা আমাদের শোনা উচিত নয়। আগে দেখা যাক, হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী রায় দেয় কি না। আমরা তার আগে মামলা শুনলে হাইকোর্ট আর শুনবে না।
এর পর সিব্বল অনুরোধ করেন, হাইকোর্ট কোনো রায় না দিলে সুপ্রিম কোর্ট যেন নিজে থেকেই মামলাটি গ্রহণ করে। তবে তখন রামানা বলেন, আমরা বিষয়টি দেখব।
এদিকে, হিজাব বিতর্কের জেরে বেঙ্গালুরুতে দুই সপ্তাহ বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিয়ে বিতর্কে সব স্কুল-কলেজ আগামী তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করেছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ বোম্মাই।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজেহিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছে মুসলিম ছাত্রীরা। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে।