নিউজ ডেষ্ক- ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে চলমান বিতর্কে উত্তেজনা তীব্র হয়ে ওঠায় কর্তৃপক্ষ তিন দিনের জন্য সব হাই স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। গত মাসে রাজ্যটির উডুপির সরকারি গার্লস পিউ কলেজের ছয় শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, হিজাব পরার জন্য ক্লাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাদের। পরে এসব ছাত্রী কলেজে আসলেও তাদের ক্লাসে ঢুকতে না দিয়ে পৃথক একটি কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়। ক্লাস কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে রাজ্যটিতে হিজাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, উডুপি ও চিক্কামাগালুরু এলাকার হিন্দু ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো ক্লাসে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব পরায় আপত্তি তোলে। এরপর শুক্রবার ও শনিবার কিছু শিক্ষার্থী হিন্দুত্ববাদীদের প্রতীক গেরুয়া রঙের উত্তরীয় পরে তাদের কলেজে মিছিল করে।
মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি হওয়ার পর উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। এরমধ্যে একটি কলেজের একদল শিক্ষার্থী তাদের কলেজে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড থেকে ভারতের জাতীয় পতাকা নামিয়ে সেখানে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে দেয়।
মান্ডিয়ায় গেরুয়া উত্তরীয় পরা একদল ছাত্র হিজাব পরা এক মুসলিম ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার পর ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান দিলে ওই ছাত্রী ‘আল্লাহু আকবর’ বলে তার জবাব দেয়।
এই পরিস্থিতিতে কর্ণাটকের বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই বুধবার থেকে তিন দিনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার এক টুইটে তিনি বলেন, “আমি সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি কর্ণাটকের সব মানুষের প্রতি শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। পরবর্তী তিন দিন সব হাই স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আমি। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
ক্লাসে হিজাব পরার অধিকারের পক্ষে কিছু শিক্ষার্থী একটি পিটিশন দাখিল করেছে। মঙ্গলবার এই পিটিশনের শুনানির পর কর্ণাটক হাই কোর্ট শিক্ষার্থী ও জনসাধারণকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।