নিউজ ডেষ্ক- কিশোরগঞ্জ সদর এলাকার চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং চিল্লারত অবস্থায় আত্মগোপনে থাকা হত্যাকারীকে লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত ব্যাক্তি হলেন মো. জাকির হোসেন (৩৬)। আজ (বুধবার) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, “গত ৩ অক্টোবর সকালে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার কাটবাড়িয়া ডাউকিয়া মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বে অচেতন অবস্থায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সেই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে আনুমানিক সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে নিহত ব্যাক্তির পাঞ্জাবির পকেটে থাকা কাগজপত্রের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।”
মৃত ব্যক্তি হচ্ছেন রমিজ উদ্দিন (৬৫)। তার বাড়ি নরসিংদী জেলায়। আর এই ঘটনায় নিহত রমিজ উদ্দিনের ছেলে বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আর এ হত্যার ঘটনার পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৪ এর অভিযানে গতকাল রাতে লক্ষ্মীপুর জেলার একটি মসজিদে চিল্লারত অবস্থায় নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মো. জাকির হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ গ্রেপ্তারকৃতরা বলেন, “নিহত জাকির গত ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংক হতে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। অতঃপর গত ২ অক্টোবর রাতে তাকে নিয়ে প্রথমে মনোহরদী থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী এবং পরবর্তী সময়ে বড়পুল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রিকশাযোগে ঘটনাস্থল সদর থানাধীন কাটাবাড়িয়া ডাউকিয়া মসজিদ এলাকায় যায় এবং নির্জন এলাকায় তারা অবস্থান নেয়। তারা সেখানে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে থাকে।”
রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের সময় রমিজ উদ্দিনকে নানা কৌশলে ডাউরিয়া মসজিদের দক্ষিণ পাশে কলাবাগানে নিয়ে যায়। অতঃপর গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেন তার সঙ্গে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পেছন থেকে বসে থাকা অবস্থায় রমিজ উদ্দিনের মাথায় সজোরে একটি আঘাত করে। হাতুড়ির আঘাতেরা সাথে সাথে রমিজ উদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার কপালে, মুখে, বাম চোখের উপর ও নিচে ও মাথার বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত করে। পরবর্তী সময়ে সে রমিজ উদ্দিনকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
র্যাব জানায়, “হত্যাকাণ্ডের পর সে কিশোরগঞ্জ থেকে মনোহরদী চলে আসে এবং নিজ বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ফজরের আজানের সময় হলে মসজিদে গিয়ে আজান দেয় ও নামাজে অংশগ্রহণ করে ও মক্তবে ২০ জন ছাত্রকে পড়ায়।”