নিউজ ডেষ্ক- ঐতিহাসিক ঝিনাই নদীর তীর। তার পাশেই প্রাকৃতিক ও মনোরম পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। প্রায় ২৭১ শতাংশ জমির ওপর পুরো মসজিদটি। মসজিদের ভেতরের দেওয়ালে পুরো ৩০ পারা কুরআন পিতল দিয়ে খোদাই করে লেখা। প্রধান ফটকের কাছাকাছি মসজিদের দেওয়ালে পিতলের সোনালি রঙে চকচক করছে আল্লাহর ৯৯টি নাম।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে তৈরি হয়েছে মসজিদটি। মসজিদের সৌন্দর্য সৃষ্টিতে ব্যবহার হয়েছে ৫০ মণ পিতল। চীন ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক সব টাইলস ও পাথর।
সৌন্দর্যমণ্ডিত মসজিদটি দেখতে আসতে শুরু করেছেন দেশ বিদেশের পর্যটকরা। এর মেঝের বিশেষায়িত টাইলসগুলো বাইরের তাপমাত্রা শোষণ করে মেঝে শীতল রাখে। রয়েছে অত্যাধুনিক লাইটিং ব্যবস্থা। পুরো মসজিদ প্রাঙ্গণ সিসিটিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে। নিরাপত্তার মধ্যে ঘুরে ফিরে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন মসজিদের সৌন্দর্য।
মসজিদকে কেন্দ্র করে ১৮ বিঘা জায়গা জুড়ে একটি হেলিপ্যাড নির্মিত হয়েছে। তা ছাড়া এখানে গাড়ি পার্কিংয়েরও পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং, গ্রামের পথ বলে যানবাহন রাখা নিয়েও নেই কোনো দুশ্চিন্তা। সব মিলিয়ে সর্বস্তরের মানুষের আসা-যাওয়ায় এটি অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
এখানে মসজিদের পাশেই নির্মিত হচ্ছে পাঁচতলা ভবন। জানা গেছে—সেখানে দেওয়া হবে বিনামূল্যে চিকিৎসা। থাকবে এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার-পরিজনদের জন্য বৃহৎ পরিসরে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র, লাইব্রেরি, কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক ধর্ম গবেষণা কেন্দ্র, বেকার যুবকদের জন্য প্রযুক্তিগত এবং আইটি প্রশিক্ষণ।
মসজিদের নির্মাণ কর্তৃপক্ষসূত্রে জানা গেছে, ১০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হলেও বহু পেশার মানুষের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে এগিয়েছে। এ পর্যন্ত ৮০ শতাংশেরও বেশি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন না হলেও এখানে বর্তমানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, শুক্রবারে জুমার নামাজ ও প্রতি বছর ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
যেভাবে যাওয়া যাবে
টাঙ্গাইল সদর থেকে মসজিদটির দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার, আর গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৭। সুতরাং প্রথমে যেতে হবে টাঙ্গাইল। তারপর সেখান থেকে গোপালপুর উপজেলা। এরপর অটোরিকশা নিয়ে ২০১ গম্বুজ মসজিদে যাওয়া যাবে খুব সহজেই।
থাকবেন যেখানে
সাধারণত ঢাকা বা আশেপাশের জেলাগুলোতে থেকে টাঙ্গাইলে দিনে গিয়ে রাতের মধ্যেই ফিরে আসা যায়। তবে, রাত্রিযাপন করতে চাইলে টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গায় বেশকিছু ভালো মানের হোটেল এবং রিসোর্ট আছে। ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট, এলেঙ্গা রিসোর্ট, এলেঙ্গা রিসোর্ট লিমিটেড, ভিআইপি হোটেল ও হোটেল প্রিন্স ইত্যাদিতে রাতযাপন করতে পারেন। এ ছাড়া পাশের উপজেলা ধনবাড়ী নবাব প্যালেসেও থাকা যেতে পারে। মধুপুর ও ঘাটাইলেও থাকার জন্য আছে ব্যবস্থা।
এসব রাত্রিযাপনে ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হবে। পছন্দসই বেছে নিতে পারবেন আপনার থাকার স্থান।