মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চি’কে ‘উসকানি ও কোভিড-১৯ নিয়ম ভঙ্গ’ করার অভিযোগের দায়ে শাস্তি হিসেবে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদচ্যুত হয়ে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর অধীনে গৃহবন্দী হিসেবে বসবাস করছিলেন সুচি।
আজ (সোমবার) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। সরকারের শীর্ষ পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিপরীতে এই প্রথম কোনো মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার দায়ে সু চিকে এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে জানায় আদালত। মিয়ানমারের আইন অনুযায়ী এই অভিযোগে অভিযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিকে যথাক্রমে সর্বোচ্চ দুই এবং তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।
এদিকে রয়টার্স আরও জানায়, আজ (সোমবার) ঘোষণা করা এই রায়ে সু চির পাশাপাশি মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট এবং সহ-আসামি উইন মিন্টকেও একই মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর এই রায় ঘোষণার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত করা হয়। সেদিন সু চির বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বাড়তি আরেক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে তা স্থগিত ঘোষণা করে আদালত।
আদালতে ৭৬ বছর বয়সী সু চির বিরুদ্ধে উসকানি, কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘন এবং অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট লঙ্ঘনসহ প্রায় ডজনখানেক অভিযোগ দায়ের করা হয়, আর এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সব মিলিয়ে একশ বছরেরও বেশি সময়ের সাজা হতে পারে। যদিও সু চি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা নিজেদের করে নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা হারানোর পর মিয়ানমারের সাবেক শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম কোনো মামলার রায়।