নিউজ ডেষ্ক- নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, সকল দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশন। তবে আমি মনে করি, এই মূহুর্তে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত রয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর স্বদিচ্ছা ও অংশগ্রহণ। এলক্ষ্যে বারবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে মতবিনিময় সভায় আহ্বান করে আলোচনা করা হয়েছে। যেকোন দল এখনও চাইলে আমাদের সাথে আলোচনায় বসতে পারে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে (টাউন হাইস্কুল) প্রাথমিকভাবে বাদ পড়াদের ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান।
এসময় তিনি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করে সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমাদের কোন আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে সংবিধানে আমাদেরকে যেসব বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তা সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে। এছাড়াও সংবিধানে অনেক বিষয়ে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সাথে আলোচনা করে যেকোন বিষয়ে সীধান্ত নিতে পারে। আমাদের কাজ আমরা সঠিকভাবে করছি কি না তা দেখেন আপনারা।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, এসব নিয়ে সরকার ও নিদিষ্ট মন্ত্রণালয় কথা বলবে। আমাদের কাজ শুধুমাত্র সংবিধান অনুযায়ী সঠিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। এতে যা করনীয় তার সবকিছুই আমরা করব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়া, তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়াসহ যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে।
৩০০ আসনে ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, সারাদেশের সকল আসনের ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজন সাড়ে তিন থেকে চার লাখ সিসিটিভি ক্যামেরা। আমাদের ইচ্ছে রয়েছে। তবে এবিষয়ে এই মুহূর্তে আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে। কারন সাড়ে তিন থেকে চার লাখ ক্যামেরা ফুটেজ দেখে সেই মুহুর্তে সীধান্ত নেয়া কতোটা কঠিন, সেটাও চিন্তা করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর নতুন দলের নামে নিবন্ধনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে ইসি ব্রি. জে (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, প্রত্যেকটি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নিদিষ্ট আইন রয়েছে। আইন অনুযায়ী সকল নিয়ম অনুসরণ করলে সেক্ষেত্রে নিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সীধান্ত গ্রহণ করবেন। কোন রাজনৈতিক দলের খাতা কলমে ঠিক থাকলেও ভেতরের সবকিছু নাও ঠিক থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আরও গভীরে গিয়ে আমরা সঠিক সীধান্ত গ্রহণ করব। যাতে স্বাধীন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয়।
তিনি আরও বলেন, এই ছবিসহ ভোটার হালনাগাদ কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে দেখলাম, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটার হতে এসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। তারমানে তাদের আগ্রহ রয়েছে নিজেদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার। একটি সুষ্ঠ, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সকল দায়িত্ব শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনেরই নয়। দেশের সকল নাগরিকদেরও দায়িত্বশীল আচরণ ও ভূমিকা রাখতে রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন, পুলিশ সুপার এএইচএম আব্দুর রকিব, রাজশাহী বিভাগীয় নির্বাচন অফিসের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রওশন আলী, নির্বাচন অফিসের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা।