‘শিক্ষা দিতে’ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দিলেন ইউপি সদস্য

বাংলাদেশ

মোবাইল চুরির অভিযোগে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন মো. রানা নামের এক ইউপি সদস্য। শিক্ষা দেওয়ার জন্য তার (শিক্ষার্থী) মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের এই সদস্য।

গতকাল মঙ্গলবার পটুয়াখালীর দুমকির পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে ঘটেছে এমন্ ঘটনা।পরে শিক্ষার্থীর মাথা ন্যাড়া করার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে স্কুল বন্ধ থাকায় আমার বড় ছেলে কাজ করার জন্য ছোট ভাইকেও নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমাকে ফোন দিয়ে বলা হয় ছোট ছেলে মাদ্রাসার হাফেজ ওলিউল্লাহ হুজুরের মোবাইল ফোন চুরি করেছে। এ সময় মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী ও রানা মেম্বারের লোকজন তাকে মারধর করে। মোবাইল ফোন যদি আমার ছেলে চুরি করতো, তবে সে তা নিয়ে চলে আসতো।’

পরে মোবাইল উদ্ধার হয়েছে জানিয়ে তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো মোবাইল চুরি করেনি। কিন্তু রানা মেম্বারের লোকজন চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলের মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে এবং ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে, আমি এর বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, ‘সকালে বড় ভাইয়ের সঙ্গে পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসায় কাজে গেলে মিস্ত্রি জানায় কাজ হবে না। পরে ওই জায়গা থেকে আসার সময় শুনি হুজুরের মোবাইল চুরি হয়েছে। তারপর মাদ্রাসার হুজুর ও স্থানীয় লোকজন আমাকে সন্দেহ করে মারধর করে। পরে তারা আমাকে ন্যাড়া করে দেয়। রানা মেম্বার, রিপন মুন্সিসহ আরও অনেকে এ কাজে যুক্ত ছিল।’

পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার হাফেজ ওলিউল্লাহ বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী তার ভাইয়ের সঙ্গে মাদ্রাসায় কাজ করতে আসে। কিছুক্ষণ পর বেঞ্চের ওপরে থাকা আমার মোবাইলটি পাওয়া যায়নি। তাই ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলে সে ফোন নেয়নি বলে জানায়। পরে মেম্বার রানাকে মোবাইলটি তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে কারা তার মাথার চুল কেটে দিয়েছে তা আমার জানা নেই।’

৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার রানা বলেন, ‘ওই ছেলে এর আগেও বেশ কয়েকবার বিভিন্ন মানুষের বাসা থেকে চুরি করেছে। তাই তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে।’

এ ব্যাপারে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাদাৎ হোসেন মাসুদ জানান, ‘ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যা হয়েছে সেটা অন্যায়। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *