লক্ষ্যমাত্রাকে অতিক্রম করে চাল রফতানিতে রেকর্ড গড়তে পারে থাইল্যান্ড

আন্তর্জাতিক

নিউজ ডেষ্ক- চলতি বছর ৭০ লাখ টনেরও বেশি চাল রফতানির সম্ভাবনা দেখছে থাইল্যান্ড। রফতানি প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রাকে অতিক্রম করে রেকর্ড গড়তে চলেছে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন।

তথ্য বলছে, থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪১০ ডলারে রফতানি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৪২৮ ডলার। অন্যদিকে একই চাল ভিয়েতনাম টনপ্রতি ৪১৫-৪২০ ডলারে রফতানি করছে। অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জানান, বর্তমানে থাইল্যান্ডের মুদ্রার বিনিময় মূল্য ডলারের বিপরীতে অনেকটাই কমেছে। এ কারণে থাই চাল প্রতিযোগিতার বাজারে বেশি আকর্ষণীয়। বিষয়টি রফতানি বাড়ার পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে।

বৈশ্বিক চাল রফতানিতে প্রথম ভারত, দ্বিতীয় ভিয়েতনাম। এর পরই থাইল্যান্ডের অবস্থান। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটি ২০ লাখ টন চাল রফতানির সম্ভাবনা দেখছে। এই হারে রফতানি অব্যাহত থাকলে তা বছর শেষে ৮০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে বলে মনে করছেন অ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বছরের এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে সর্বাধিক চাল সরবরাহ করেছে থাইল্যান্ড। এর মধ্যে অন্যতম ইরাক। এছাড়া আফ্রিকার বাজারে অব্যাহতভাবে চাহিদা বাড়ার বিষয়টিও মাথায় রাখছে থাইল্যান্ড। অন্যদিকে এশিয়ার আমদানিকারক দেশগুলো থাইল্যান্ডের চালকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কারণ বর্তমানে ভিয়েতনামের তুলনায় থাই চালের দাম তুলনামূলক কম।

এদিকে ভুট্টা ও গমের দাম বাড়ায় পশুখাদ্য উৎপাদনকারীরা বর্তমানে ভাঙা চালের দিকে ঝুঁকছেন। তাই, ভাঙা চালের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। চলতি সপ্তাহে এশিয়ার শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলোয় চালের দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় খাদ্যশস্যটির দামে এমন ঊর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ভিয়েতনামে চালের জাহাজীকরণ ব্যয় বাড়ার ঘটনাও এতে প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।

ভুট্টা ও গমের দাম বাড়ায় পশুখাদ্যে ভাঙ্গা চালের ব্যবহার বাড়ছে। সেইসাথে এই ব্যবহারের কারণে ৫ শতাংশ দাম বেড়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে বিজনেস রেকর্ডার। এ সময়ে থাইল্যান্ডে ভাঙা চালের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। উল্লিখিত মানের প্রতি টন চালের দাম দাঁড়িয়েছে ৪১৫-৪২৮ ডলার, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০০-৪০৩ ডলার।

ব্যাংককভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানান, এ পরিস্থিতি চালের মূল্যবৃদ্ধিতে বেশ ভূমিকা রাখছে। থাইল্যান্ডের আরেকজন ব্যবসায়ী জানান, সম্প্রতি ইউরোপীয় অঞ্চল, যুক্তরাষ্ট্র, ইরাক ও ইরান থেকে চালের চাহিদা বেশ ভালোভাবেই বেড়েছে। এসব ক্রেতারা বিভিন্ন মানের থাই চালের প্রতি তাদের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। থাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জানুয়ারিতে দেশটির রফতানীকৃত চালের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫২ টন, যার মূল্য ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ।

আরেক শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ভারতের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম বেড়ে প্রতি টনের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৭১-৩৭৮ ডলার, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৭০-৩৭৬ ডলার। গত জুনের পর এটি সর্বোচ্চ দাম। অন্ধ্র প্রদেশের এক রফতানিকারক জানান, ভুট্টা ও গমের দাম বাড়ায় ভোক্তারা চালের মজুদ বাড়াতে চাইছেন। ফলে খাদ্যশস্যটির দামে এমন বাড়তি প্রভাব পড়ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *