নিউজ ডেস্ক: রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীদের তালিকা করতে আইন আসছে। এদের তালিকা তৈরি করে গেজেট প্রকাশের জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে (জামুকা) সরকারের কাছে সুপারিশ করার ক্ষমতা দিয়ে নতুন ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান থাকবেন। সচিব ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন। কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা নয়জনের পরিবর্তে ১১ জন করা হচ্ছে। কাউন্সিলের মহাপরিচালক যিনি থাকবেন তিনি সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে গেজেটভুক্ত ও সনদপ্রাপ্ত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং একাত্তর সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন বা খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগসহ অন্যান্য অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যকলাপ দিয়ে মানুষ হত্যা বা তাদেরকে অত্যাচার করেছেন, পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতা করেছেন তাদের তালিকা তৈরি করে গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।’
আইন অনুযায়ী জামুকাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিতে হবে বলেও জানান তিনি।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘রেজিস্ট্রার সংগঠনের নিবন্ধন দেবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হলে সে সংগঠনের নিবন্ধন বাতিল করা হবে। আগে কাউন্সিল নিবন্ধন করত। এখন রেজিস্ট্রার নিবন্ধন দেবে।’
হচ্ছে নতুন পেট্রোবাংলা আইন
বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) নিয়ে নতুন আইন হচ্ছে। ‘বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ করপোরেশন আইন, ২০২২’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৯৮৬ সালের অধ্যাদেশ দিয়ে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছিল। সামরিক শাসনামলে প্রণীত অধ্যাদেশগুলোকে আইনে রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা থাকায় এটিকে আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে।’
‘এটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবেই থাকবে। তাদের বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ করপোরেশন হিসেবে নামকরণ করা হবে। এই করপোরেশনের অনুমোদিত মূলধন থাকবে ৫ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন থাকবে ২০০ কোটি টাকা। সরকার প্রয়োজনেবোধে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সব মূলধন পরিবর্তন করতে পারবে, সেটা বিধির মধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
পরিচালনা পর্ষদে একজন চেয়ারম্যান ও আটজন পরিচালক থাকবেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অতিরিক্ত সচিব বা এই মর্যাদার কাউকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। উন্নয়ন তহবিল থাকবে। করপোরেশন সরকারের অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিতে পারবে।’