“যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো চিঠির কথা স্বীকার করেছেন ফখরুল”

জাতীয়

নিউজ ডেষ্ক- তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশিদের কাছে বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক চিঠি লেখার কারণে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে আত্মরক্ষার জন্য তারা প্রচণ্ড মিথ্যাচার করছে।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো বিএনপি মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠিপত্র ও বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সাথে বিএনপির ঢাকা অফিসের ঠিকানা সম্বলিত চুক্তিনামা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন হাছান মাহমুদ।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করা, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, দেশকে বিদেশিদের কাছে বিব্রত করার জন্য বিদেশিদের কাছে বিএনপি যে চিঠি লিখেছে এবং লবিস্ট নিয়োগ করেছে।

বিজ্ঞাপন
এজন্য সুশীল সমাজসহ দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব সংবাদ সম্মেলন করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছেন সেটি শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, কিন্তু সাহায্য বন্ধ করার জন্য যে বলেছেন, সেটি অস্বীকার করেছেন।

ড. হাছান এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য বিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারওম্যান ও বৈদেশিক প্রোগ্রাম বরাদ্দ বিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা এবং বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান ও নিকটপূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া এবং কাউন্টারটেররিজম বিষয়ক সিনেট সাব-কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা বিএনপির প্যাডে মির্জা ফখরুল সাহেব স্বাক্ষরিত চিঠির কপিগুলো তুলে ধরেন। মন্ত্রী চিঠিগুলোর শেষ অনুচ্ছেদ পড়ে শোনান এবং বলেন, সেখানে বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দেওয়াকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অর্থাৎ প্রকারান্তে সাহায্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

তথ্যমন্ত্রী লবিস্টদের সাথে বিএনপির চুক্তিপত্রগুলো দেখিয়ে উল্লেখ করেন, বিএনপি কয়েকটি চুক্তিতে তাদের কার্যালয়ের ঠিকানা ২৮ ভিআইপি রোড, নয়াপল্টন, ঢাকা, বাংলাদেশ দিয়েছে। তাদের পক্ষে জনাব আব্দুস সাত্তার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং একই ধরণের চুক্তি তারা বিদেশের ঠিকানা দিয়ে করেছেন, সেখানে স্বাক্ষর করেছেন জনাব জিয়াউল ইসলাম।

‘মির্জা ফখরুল সাহেব এই ডকুমেন্টগুলো কিভাবে অস্বীকার করবেন’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা যে প্রচন্ড মিথ্যাচার করেন, দেশের বিরুদ্ধে তারা যে ষড়যন্ত্র করছেন, এগুলো হচ্ছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শুধু তাই নয়, তারা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও ক্রমাগতভাবে মিথ্যাচার করেছে, গতকাল বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ তাদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। জলজ্যান্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল সাহেব মিথ্যাচার করেছেন সেই প্রশ্ন আমারও। পুরো জাতি যখন তাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন কিন্তু সেটি ঢাকা যাচ্ছে না। যে রাজনৈতিক দল এ ধরণের কাজ করে, তাদের আসলে দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়। ’

‘বিএনপির অব্যাহতভাবে দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র, লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার অপচেষ্টা সত্ত্বেও সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের পিস বিল্ডিং কমিশন অর্থাৎ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই কমিশনের সদস্য’ জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, এ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস সদস্য ও পররাষ্ট্রবিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে। তাই বিএনপিকে অনুরোধ জানাব দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার এগুলো বন্ধ করার জন্য। ’

এ সময় বেগম জিয়ার সুস্থ হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়াতে বিএনপি প্রচন্ডভাবে আহত ও হতাশ এজন্য যে, এবিষয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার আর সুযোগ নেই।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *