ময়মনসিংহে পাইকারি বাজারে ৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে শসা

দেশজুড়ে

নিউজ ডেষ্ক- ময়মনসিংহে পাইকারি বাজারে শসার দাম ৪ টাকা কেজি। তবু নেই ক্রেতা। সারি সারি শসার স্তূপ নিয়ে বসে আছে কৃষকরা।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলার তারাকান্দা উপজেলার গোয়াতলা শসার বাজারে গিয়ে দেখা যায় এই চিত্র। রোজায় খুচরা বাজারে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এত কম দামে শসা বিক্রি করতে হচ্ছে, এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষিরা।

তারাকান্দা ও ফুলপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সারা বছর শসার আবাদ হয়। এই সব এলাকার চাষিরা গোয়াতলা বাজারে শসা বিক্রি করায় এই বাজার ‘শসার বাজার’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এই বাজার থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ টন শসা বিভিন্ন জেলায় যায়। এই বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ জন।

কৃষকের উৎপাদিত শসার দাম হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শত শত কৃষক। আবার পচনশীল পণ্য হওয়ার কারণে মজুদ করার সুযোগ না থাকায় পানিরদরে শসা বিক্রি করতে হচ্ছে।

তারাকান্দা উপজেলার গোহালকান্দি গ্রামের মোসলেম উদ্দিন বাজারে শসা নিয়ে এসেছেন বিক্রি করতে। তিনি জানান, ২০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এখন যে দাম, তাতে বাজারে শসা নিয়ে আসতে ভ্যান ভাড়াও উঠছে না। বকশীমুল গ্রামের চাষি শাতাবউদ্দিনসহ কয়েকজন জানালেন একই কথা। খুচরা বাজারে শসার চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কেন পাইকারি বাজারে দাম পাচ্ছে না— প্রশাসনে পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানান তারা।

এই বাজারে কয়েকজন পাইকারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ঢাকা থেকে আড়ৎদাররা গাড়ি পাঠাচ্ছেন না। আড়ৎদার মাল না কিনলে তাদের বিক্রি করার সুযোগ নেই। এছাড়াও বাজারে চাহিদার তুলনায় শসা বেশি বলে দাম কমে গেছে।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) শোয়েব আহমেদ জানান, জেলায় ১ হাজার ১৫৩ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ করা হয়েছে। এ বছর শসার ফলনও ভালো হয়েছে। রোজায় চাহিদা মাথায় রেখে অনেক কৃষক শসার আবাদ করেছেন। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম একেবারে কমে গেছে। আর এই সুযোগ নিচ্ছেন আড়ৎদার ও দালালরা। দাম হঠাৎ একেবারে কমে যাওয়ায় আগামী মৌসুমে শসা চাষ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এ বছর যারা শসা চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আগামী মৌসুমে তারা শসার চাষ করতে চাইবেন না। তখন বাজারে শসার সরবরাহ কমে যাবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *