নিউজ ডেষ্ক- বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সাফায়েত মাহবুব ফারাইজীকে হত্যার অভিযোগে বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তয়াছের জাহানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আরাফাতুল রাকিবের আদালতে ভুক্তভোগীর মা শামিমুন নাহার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিকেলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ৯ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে সকালে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মশিউর, সুজানা তাবাসসুম সালাম, আফতাব, শাখাওয়াত, আসওয়াদ, কামরুল হক (বাড়ির মালিক) ও রিপন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, জন্মদিন পালনের জন্য ভুক্তভোগী সাফায়েত মাহাবুব ফারাইজী ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। এরপর সাফায়েত তাঁর মা শামীমুন নাহার লিপির সঙ্গে সুজানা তাবাসসুম সালাম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদকে বন্ধু বলে পরিচয় করে দেন। মাঝে মাঝে সুজানা তাবাসসুম সালাম দেখা করতে সাফায়েতের বাসায় আসতেন। পরে এ মামলার বাদী শামীমুন নাহার জানতে পারেন, আসামিরা তাঁদের বাসায় নেশা গ্রহণ করেন এবং বাদিনীর ছেলে সাফায়েতকে তা খেতে বলেন।
এরপর আসামি সুজানা তাবাসসুমকে সাফায়েতের সঙ্গে দেখা ও বাসায় আসতে নিষেধ করেন বাদী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদ পরস্পর যোগসাজশে বাদীর বাসায় এসে তাঁদের গালিগালাজ ও আঘাত করেন। তখন বাদিনী ৯৯৯ কল দিলে রামপুরা থানা থেকে পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মীমাংসা করে। এরপর সাফায়েত আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
পরে ১০ ডিসেম্বর বাদী ও তাঁর ছেলে সাফায়েত গুলশানে কাজে যান। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদ অতর্কিত আক্রমণ করে তাঁদের আহত করেন। এরপর তাঁরা চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে গুলশান থানা তা গ্রহণ করেনি। এ ঘটনার দিন আসামিরা বাদীর বাড়িতে গিয়ে আসামি তাবাসসুমের সঙ্গে ভুক্তভোগী সাফায়েতের যোগাযোগ ও সম্পর্ক রাখতে বলেন। না হলে সাফায়েত দেশে থাকতে পারবেন না বলে জানান আসামিরা।
মামলার অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ ডিসেম্বর সাফায়েত বড়দিনের অনুষ্ঠান পালন করতে বের হন এবং রাত পৌনে ১২টায় ফিরে আসেন। এ সময় সুজানা তাবাসসুম, মো. আফতাব, মো. শাখাওয়াত ও আসওয়াদকে দেখে বাদী রাগান্বিত হন। তখন সাফায়েত তাঁদের নিয়ে চলে যান। এরপর তিনি আর বাসায় ফিরে আসেননি। পরদিন ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাটারা থানা এলাকা থেকে সাফায়েতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ভাটারার যে বাসা থেকে সাফায়েতের লাশ উদ্ধার হয়, সেখানে যান বাদী শামিমুন নাহার। তখন বাড়ির মালিক কিংবা ব্যবস্থাপক কেউ তাঁকে ঢুকতে দেননি। থানায় মামলা করতে গেলেও এসি তয়াছের ও এসআই মশিউর তাঁকে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন বাদী।