নিউজ ডেষ্ক- ব্যাহত হচ্ছে ভারতের শুকনো মরিচ সরবরাহ। ঊর্ধ্বমুখী দাম এবং বিশ্বজুড়ে বহুমুখী প্রতিবন্ধকতায়, গুণগত মান কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রাক্কলনে দেখা গিয়েছে, চলতি বছর উৎপাদন ২৫-৩০ শতাংশ কমতে পারে।
মসলাপণ্যের মধ্যে ভারত শুকনো মরিচ সর্বাধিক রফতানি করে। তথ্য বলছে, চলতি বছর এ মসলার দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। মূলত নিম্নমুখী উদ্বৃত্ত এবং কীট-পতঙ্গের আক্রমণে উৎপাদন কমে যাওয়া এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। এরই মধ্যে প্রধান প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রে পণ্যটি সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
বিজয়কৃষ্ণ স্পাইস ফার্মের এমডি রাভিপাতি পেরাইয়া বলেন, চলতি মৌসুমে শুকনো মরিচ আবাদ ২৫ শতাংশ বাড়লেও উৎপাদন কোনো দিক থেকেই বাড়েনি। অসময়ে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রভাবে উৎপাদন কমেছে ৩০ শতাংশ।
মসলা বোর্ডের প্রাক্কলন বলছে, গত বছর ভারতে ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৩০৪ টন মরিচ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও কর্ণাটক থেকেই এসেছে মোট উৎপাদনের ৬০ শতাংশ। বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচের গড় দাম ২০০ রুপিতে উন্নীত হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ রুপিতে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মরিচে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। তার ওপর ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে মরিচের গুণগত মান কমেছে। এ কারণে চলতি বছর পণ্যটি থেকে রফতানি আয় কমবে বলে আশঙ্কা করছেন রফতানিকারকরা। অন্যদিকে দাম বেশি হওয়ার কারণে ক্রেতারা বর্তমানে পণ্যটি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করছেন।
কয়েক বছর ধরে চীন ভারতীয় শুকনো মরিচের শীর্ষ ক্রেতা। ২০২০-২১ মৌসুমে দেশটি ৮ হাজার ৪৩০ কোটি রুপির ৬ লাখ ১ হাজার ৫০০ টন মরিচ আমদানি করে। আগের মৌসুমের তুলনায় আমদানি বাড়ে ২৯ শতাংশ। এদিকে আমদানির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। ওই সময় বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬১৫ টন শুকনো মরিচ আমদানি করেছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চীনে করোনা মহামারী আবারো ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় মরিচ আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। বেশির ভাগ রেস্টুরেন্ট বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া গত বছর চীন বিপুল পরিমাণ মরিচ আমদানি করায় দেশটিতে বড় আকারের মজুদ রয়েছে। এসব কারণেই আমদানি কমিয়েছে দেশটি।
রফতানিকারকরা বলছেন, প্রিমিয়াম মানের মরিচের দাম যখন বেশি থাকে তখন আমদানিকারকরা মাঝামাঝি মানের মরিচ বেশি ক্রয় করেন। কিন্তু বর্তমানে মাঝামাঝি মানের মরিচের দামই আকাশচুম্বী।