নিউজ ডেষ্ক-এক-তৃতীয়াংশ কমতে পারে ইউক্রেনের গম উৎপাদন। দেশটিতে যুদ্ধের কারণে গম উৎপাদনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশ হওয়ায় এক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির শঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে।
সম্প্রতি স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে এমনটা জানিয়েছে একটি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে এ শঙ্কার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ দেশটির কৃষি ও খাদ্য সরবরাহ খাতকে বিপর্যস্ত করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কায়রোস জানায়, গত বছর ইউক্রেনে ৩ কোটি ৩০ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল। এর মধ্যে দেশটি রফতানি করেছে দুই কোটি টন। এর মধ্য দিয়ে গম রফতানিতে দেশটি শীর্ষ ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। কিন্তু চলতি বছর যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে দেশটি সব মিলিয়ে ২ কোটি ১০ লাখ টন গম উৎপাদনে সক্ষম হতে পারে; যা গত পাঁচ বছরের গড় উৎপাদনের তুলনায় ২৩ শতাংশ কম।
প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর গম উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কমতে পারে। কারণ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হয়। কিন্তু এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে হামলা জোরদার করছে রাশিয়া।
ইউক্রেন এরই মধ্যে খাদ্যশস্য ও অনেক খাদ্যপণ্য রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। উদ্দেশ্য স্থানীয় জনগণের চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সংরক্ষণ করা। তাছাড়া রাশিয়া কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর দখল করে রাখায় পরিবহনসংক্রান্ত জটিলতাও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
যুদ্ধের আগে থেকেই বিশ্বজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী সার ও জ্বালানি পণ্যের দাম। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে গম উৎপাদনে। ফলে মার্চে গমের বৈশ্বিক দাম ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।
রাবোব্যাংকের বিশ্লেষকরা জানান, মার্চের পর গমের দাম কমতে শুরু করে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে কৃষিপণ্যটির দাম আবারো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস কর্তৃক প্রকাশিত গ্লোবাল এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে আর্জেন্টিনায় গম উৎপাদন ও রফতানি কমে যেতে পারে।
ইউএসডিএর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, শস্যটির উৎপাদন ১৫ শতাংশ কমে ১ কোটি ৮৬ লাখ টনে নামতে পারে। মূলত কম জমিতে আবাদ ও ফলনের কারণে উৎপাদন কমবে। এর ফলে প্রভাব পড়বে রফতানিতেও।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে আর্জেন্টিনার গম রফতানি কিছুটা কমে ১ কোটি ২৬ লাখ টনে নামতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সারের তীব্র সংকট চলছে। এছাড়া অন্যান্য উৎপাদন উপকরণের দামও আকাশচুম্বী। এ কারণে গম আবাদ ব্যাপক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। গম আবাদি জমির পরিমাণ ৬ শতাংশ কমে ৬২ লাখ হেক্টরে নামতে পারে। তবে কেউ কেউ মনে করছেন আবাদি জমির পরিমাণ ২৫ শতাংশ কমবে।