বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ায় যা বললেন মেজর আখতারুজ্জামান

রাজনীতি

নিউজ ডেষ্ক– এবার পঞ্চমবারের মতো দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব) আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ থেকেও তাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এ ঘটনা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এবারও বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৫ এর গ ধারা মোতাবেক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে।

রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এদিকে দুপুর ১টার দিকে আখতারুজ্জামান রঞ্জনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়।

এ সময় তিনি জানান, মাত্র ১০ মিনিট আগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী মেজর কামরুল ইসলাম আমাকে টেলিফোন করে বললো আমাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করেছে বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। আমি এই মুহূর্তে গ্রামে নতুন করে টমেটোর চারা লাগাচ্ছি। তাই পত্রপত্রিকা পড়ার সুযোগ হয়নি। খবরটা শুনে প্রথমে হাসিই পেল এবং তার পর ভেবে ভালোই লাগল যে; এখনও বিএনপিতে আমার গুরুত্ব ছিল! তারপরও খুব কষ্ট পেলাম।

কষ্ট কেন পেলাম তা আর কারও সঙ্গে শেয়ার করতে ইচ্ছা করলাম না। যাই হোক দেশমাতা খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করি এবং সেই সঙ্গে তারেক রহমানের সফলতা কামনা করি। আমি অনেক দিন থেকেই জানি তারেক রহমানের সঙ্গে আমার রাশি বিপরিতমুখী। তিনি কখনই আমার মতো করে ভাবেন না। তাই আমি পরাজিত হলে দারুণভাবে খুশি হব। কারণ তাতে সম্ভবত তারেক রহমানেরই জয় হবে। আল্লাহ তারেক রহমানের বিজয় এনে দিক। আমি এখন আমার মত করে ভাবতে, লিখতে এবং বলতে থাকি। বহিষ্কারে যারা খুশি হয়েছেন তাদের আমার পক্ষ থেকে অবশ্যই ধন্যবাদ।

বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালে পঞ্চম এবং ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এ ছাড়া বিগত নির্বাচনসহ অন্য দুটি নির্বাচনে তিনি বিজয়ের হাসি বঞ্চিত হন।
মোবাইল ফোনে প্রতিক্রিয়া জানানোর শেষ পর্যায়ে তিনি আরও জানান, আমাকে দল ক্ষমতায় থাকতেও বহুবার বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু আমি দল এবং দলীয় আদর্শচ্যুত হইনি। কেন না আমি প্রেসিডেন্ট জিয়া, গণতন্ত্রের জননী দেশমাতা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের রাজনীতি করি। আর এ কারণেই মাঝেমধ্যে অসহ্য যন্ত্রণার সত্য কথা এবং সমালোচনা করে দলের সুবিধাভোগীদের শ্যেন দৃষ্টির শিকার হই। তবে, কথা একটিই আমি বিএনপিতে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মেজর (অব.)আখতারুজ্জামান এর আগেও এমন সব অভিযোগে দল থেকে চারবার বহিষ্কৃত হয়েও ২০১৮ সালের বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসন থেকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন।

তবে ওই নির্বাচনের চার দিন আগে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর এ আসনের কটিয়াদী উপজেলার বীর নোয়াকান্দি গ্রামে এক উঠানবৈঠকে উপস্থিত হলে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ ওই বৈঠকে হাজির হয়। এ সময় তারা ওই বৈঠক পণ্ড করে দেয়।

এ হামলায় মেজর আক্তার রক্তাক্ত জখমের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। এমনকি ওই বৈঠক থেকে তার ছেলে হাবিবুজ্জামান রনিসহ তিন নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এমন আতঙ্ক-উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যে অনুষ্ঠিত সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক আইজিপি ও রাষ্ট্রদূত নূর মোহাম্মদের কাছে হেরে যান মেজর আক্তারুজ্জামান রঞ্জন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *