বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সেনা সদস্যকে পিটিয়ে আহত

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক- জয়পুরহাটে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক সেনা সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে যৌথ অভিযানে ওই চেয়ারম্যানসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতে পাঠালে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি জয়পুরহাট কোর্টের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ খান ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সদরের আমদই ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু (৫০) ও আহত সেনা সদস্যের চাচা আব্দুল ওহাব (৫২)। শাহানুর আলম সাবু সদরের গোয়াবাড়িঘাট গ্রামের মৃত হায়দার আলীর ছেলে ও আব্দুল ওহাব মীর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে।

মামলার এজাহার, র‌্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত সেনা সদস্য রুহুল আমিন ওই ইউনিয়নের মীরগ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আমদই চৌমুহনী বাজারে একটি দোকানের পেছনের জায়গা নিয়ে সেনা সদস্য রুহুল আমিন ও তার চাচা আব্দুল ওহাবের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি হয় এবং পরে তারা বিষয়টি পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করে।

কিন্তু একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবুর নির্দেশে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান সেনা সদস্য রুহুল আমিনকে মুঠোফোনে কল দিয়ে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আসতে বলেন। এরপর রুহুল তার স্বজনদের নিয়ে ওই মেম্বারের অফিস কক্ষে যান। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু আপোষনামার একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রুহুল আমিনকে চাপ দেন।

রুহুল আমিন ফাঁকা আপোষনামায় স্বাক্ষর করেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান সাবু গ্রাম পুলিশের কাছ থেকে বেতের লাঠি কেড়ে নিয়ে সেনা সদস্য রুহুল আমিনকে বেদম পেটাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে রুহুল আমিন অজ্ঞান হয়ে যান। এতে সেনা সদস্য রুহুল আমিন গুরুতর জখম হয়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। রুহুল বর্তমানে বগুড়ার সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ঘটনায় রুহুল আমিনের চাচা মাহফুজুল হক বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদুল ইসলাম সাবু, আব্দুল ওহাব, ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান, তেঘরা দণ্ডপানি গ্রামের নূর মোহাম্মদ খাজার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চার জনের নামে বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শহরের পূর্ব বাজার এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবুকে গ্রেপ্তার করে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জয়পুরহাট থানায় জিডি মূলে চেয়ারম্যানকে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে মামলার আরেক আসামি আব্দুল ওহাবকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জানতে চাইলে মামলার বাদী মাহফুজুল হক বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আমার ভাতিজা রুহুল আমিনকে লাঠি পেটা করেছেন। সে গুরুতর আহত হয়ে বগুড়া সিএমএইচএ ভর্তি রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে মামলার বাদী করা হয়েছে।

জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম আলমগীর জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেনা সদস্যকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানে দুই জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জয়পুরহাট কোর্টের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেনা সদস্যকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুইজনকে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *