নিউজ ডেষ্ক- গত ২০ মে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী চাষিরা সকাল থেকেই আম পাড়তে শুরু করেন। ২০ মে থেকে আম নামানোর কথা থাকলেও তার সপ্তাহখানেক আগেই বানেশ্বর হাটে দেখা দেয় গোপালভোগের। তবে, এবার গতবারের চেয়ে দাম বেশি। বাজারে এসেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সুমিষ্ট গোপালভোগ আম।
চলতি মাসের ১২ তারিখে অপরিপক্ব আম নামানো ঠেকাতে জেলা প্রশাসন সময় ঠিক করে দেয়। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা আম নামানো যাচ্ছে। এ ছাড়া ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি; ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারী-৪, ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি এবং ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি আম নামিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা।
এর পরপরই গুটি জাতের আম বেচাকেনা শুরু হয়। তবে, এবার কোম্পানিতে আম বিক্রির প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। চাষিরা বাজার থেকে দু-একশ টাকা কম পেলেও কোম্পানিতে বিক্রি করছেন আম। গুটি আম ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা দরে কোম্পানিতেই বিক্রি হচ্ছে।
২০ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বানেশ্বর বাজারে বিক্রি হচ্ছে গোপালভোগ আম। অন্যান্য আমের মধ্যে শুধু গুটি জাতের আম রয়েছে। গোপাল বিক্রি হচ্ছে ১৭শ থেকে ১৮শ টাকা মণ। যে আমের আকার একটু ছোট ,দেখতে খসখসে সে আম বিক্রি হচ্ছে ১৪’শ থেকে দেড় হাজার টাকা মণ।
চাষিরা বলছেন, গতবারের তুলনায় এবার মণপ্রতি ৬শ থেকে ৮শ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। গাছের পরিচর্যা করার পরও ফল আটকানো যায় নি, ফলে ফলন গতবারের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলন কম হলেও দামে পুষিয়ে যাচ্ছে বলে খুশি তারা।
পুঠিয়া উপজেলার নামাজ গ্রাম এলাকার একটি বাগানে আম নামাচ্ছিলেন হাজী মোহাম্মদ আতাউর রহমান। চারঘাট থানার সলুয়া এলাকার এ আম চাষির রয়েছে প্রায় ২০০০ টি বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ। গতবারে আম পেয়েছিলেন প্রায় ১২ হাজার মণ।
আলাপকালে এ আম চাষি জানান, গতবার গুটি আম বিক্রি করেছিলাম আড়াইশ থেকে তিনশ টাকায়। তবে এবার করোনা না থাকায় এই আম বিক্রি করেছি এক হাজার টাকায়। দাম আছে, তাই ফলন নিয়ে চিন্তা করছি না। গোপাল নামানো শুরু করেছি। বাগান থেকেই ১৬’শ টাকা মণ বিক্রি করা যাবে। গতবার করোনায় ক্ষতি হয়েছে সেবার আম ছিলো। গতবারের তুলনায় ফলন গড়ে ৫০ শতাংশ এবার কম হবে তবে, দাম ভালোই আছে।
উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় আমের হাট বানেশ্বরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিমণ কাঁচা গোপালভোগ আম চাষিদের কাছ থেকে শুক্রবার আড়তগুলোতে কেনা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে। দু’একদিনের মধ্যে দাম আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীর ৯ উপজেলা ও মহানগরে এবার ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৫৯ মেট্রিক টন। আমের মোট উৎপাদন হতে পারে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন।