নিউজ ডেষ্ক- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে সরকারকেই তার দায় নিতে হবে। শুধু দায় নয়- এর জন্য একদিন জনগণ বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বুধবার (১৫ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি অসুস্থ খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তিতে দেশে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার যে শর্ত তাকে দেওয়া হয়েছে তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তিতে শর্ত দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ধারার প্রশাসনিক নির্দেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় লেখা আছে, সাময়িক মুক্ত করা যাবে শর্ত দিয়ে অথবা শর্তহীনভাবে। অর্থাৎ যদি এদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধা থাকে তাহলে সেই শর্তটি আপনারা (সরকার) তুলে নেন।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অনতিবিলম্বে যে বিধি-নিষেধ ও শর্ত আছে তা তুলে নেন। যাতে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু সেই শর্ত যদি তুলে না নেন এবং আমাদের নেত্রীর যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে আপনাদেরকেই তার দায় নিতে হবে। এর দায়ে একদিন জনগণের আপনাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বুঝে- না বুঝে বলেন বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে যেতে হবে। যে আদেশে আজকে বেগম খালেদা জিয়া সাময়িকভাবে মুক্ত। সেই আদেশে এবং ধারায়ই আপনারা শর্ত দিয়েছেন। আর আপনারাই একমাত্র শর্ত তুলে নিতে পারেন। প্রশাসনিকভাবে শর্ত তুলে নিলে আজকে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন। অযথা আদালত দেখিয়ে লাভ নাই। কারণ আদালতের নির্দেশে কিন্তু তিনি সাময়িক মুক্ত নন। তাই তারা জেনে- শুনে অথবা অবুঝের মতো না বুঝে আমাদের এ ধরণের কথা বলে মূলত জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চান।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকগণ এবং মেডিক্যাল বোর্ড বারবার সুপারিশ করেছেন তার উন্নত চিকিৎসা দরকার উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, বেগম খালেদার রোগের চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। তাই তার বিদেশে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কেনো যেতে পারছেন না? কারণ একটি বানোয়াট মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে প্রশাসনিক নির্দেশে সাময়িক মুক্ত আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে প্রশাসনিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে শর্ত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শর্ত কি? তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। আজকে এই শর্তের জন্যই তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পারছেন না।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, সরকারের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার কথা অনেকেই বলেন। আমরা এটা বলি না। কারণ বেগম জিয়া নিজেই নিজের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু সরকার যে বিধি-নিষেধ দিয়েছেন সেজন্য তিনি বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না।
খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। এর মধ্যে একটিতে রিং পরিয়ে তাকে রক্ষা করা গেছে। আমরা ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তার হার্টে শিরা-উপশিরার আরো দুটি ব্লক রয়েছে। টেকনিক্যালের কারণে এখন সেই চিকিৎসা করা যাচ্ছে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।