নিউজ ডেষ্ক- আবার শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা গণনা। আগামী ডিসেম্বরের প্রথম দিকে এই গণনার কাজ শুরু হবে। সর্বশেষ বাঘ গণনা অনুযায়ী, বাংলাদেশের সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘ রয়েছে। সম্প্রতি প্রকল্প পরিচালক ও পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাসের মহসিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি জানান, এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের ৩ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে। এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় দিলেই অর্থ পাওয়া যাবে। এক মাসের মধ্যে এই অর্থ মিলবে বলে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। আর অর্থ পাওয়ার পর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাঘ শুমারির কাজ শুরু হবে।
এদিকে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প অনুমোদন হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের একটি অংশে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা দিয়ে বাঘ গণনা করা হবে।
এছাড়াপ্রকল্পের অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে- বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সেজন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেওয়া, ঘূর্ণিঝড় ও উচ্চ জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায়, সেজন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা, সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করা এবং আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায়, সেজন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ।
এছাড়া সুন্দরবনের বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের ৩৪০ জন সদস্য ও চারটি রেঞ্জের কমিউনিটি প্যাট্রল গ্রুপের ১৮৫ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, পোশাক সরবরাহ ও প্রতি মাসে বনকর্মীদের সঙ্গে মাসিক সভা করা।
এদিকে বর্তমানে বাঘ সারা বিশ্বে একটি বিপন্ন প্রাণী। বিশ্বের ১৩টি দেশে মাত্র ৩ হাজার ৮৪০টি বাঘ টিকে রয়েছে। ২০১৮ সালের জরিপ মতে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০০৯-২০১৭), ২০১০ সালের বিশ্ব বাঘ সম্মেলনের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৬-২০২৭) ও গ্লোবাল টাইগার ফোরামের সিদ্ধান্তের আলোকে দেশে বাঘের হালনাগাদ তথ্যসংগ্রহ এবং সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও এর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।