নিউজ ডেষ্ক- ভূমিহীন ও ঘর না থাকায় পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে পাওয়া ওই ঘরের সঙ্গে পান দুইশতক জমি। তবে এখন অভাব কাটিয়ে স্বচ্ছল হয়ে নিজেই কিনেছেন ৮ শতক জমি। তাই উপহারের ঘর উপজেলা প্রশাসনের কাছে ফেরত দিয়েছেন মো. জমীর উদ্দীন বিশ্বাস। চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাসিন্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমির দলিল ফেরত দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপহারের ঘরে ২০২১ সালের ২০ জুন থেকে জমীর উদ্দীন বিশ্বাস স্ত্রী আফরোজা ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কলার ব্যবসা করে লাভবান হয়ে সম্প্রতি তিনি নিজের নামে ৮ শতক জমি কিনেছেন। নিজেই জমির মালিক হওয়ায় ভূমিহীন হিসেবে পাওয়া ঘর ও জমির দলিল গত ১৮ জানুয়ারি জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করে ফেরত দেন।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শাহাপুর মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ১৩৩৭ নম্বর দাগে আশ্রায়ণ প্রকল্পে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা ঘর জমীরকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইএনওর কাছে আবেদনে জমীর বলেছেন, তার এখন নিজের নামে জমি আছে। অন্য যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আছে তার নামে দেওয়া জমিসহ উপহারের ঘরটি তাদেরকে দেওয়ার জন্য।
এদিকে এই খবর এলাকায় জানাজানি হওয়ায় জমীর প্রশংসায় ভাসছেন। অন্যের জমিতে কামলা খেটে একদা সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া জমীর বিশ^াস এখন কলার ব্যবসা করে স্বচ্ছল। উপহারের ঘর পাওয়ার পর মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে তিনি বিভিন্ন বাজারে কলা বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করেন। এতে তিনি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেছেন। পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসায় অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ৮ শতক জমি কিনেছেন।
ঢাকা টাইমসকে জমীর বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মাথা গোঁজার জন্য ঘর ও জমি দিয়েছেন। নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই হওয়ার পর আমি নিশ্চিন্তে কলার ব্যবসা শুরু করি। আমি এখন বেশ স্বাবলম্বী। নিজের আয়ের টাকা দিয়ে ইতোমধ্যে ৮ শতক জমি কিনে ঘরও তৈরি করেছি।
‘যেহেতু আমার নিজের মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হয়েছে তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর ও জমি ফেরৎ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। ফলে এখন আর এই ঘর ও জমি আমার প্রয়োজন না থাকায় সমাজে আরও যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার আছে এই ঘরটা এখন তাদের প্রাপ্য। আমি চাই এই ঘরটা অন্য কোনো ভূমিহীন পরিবারকে দেওয়া হোক’—যোগ করেন জমীর।
আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মুক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অনেকে আছেন তথ্য গোপন করে সরকারি সুবিধা নেবার জন্য অপচেষ্টা করে থাকেন। সেই দিক দিয়ে জমীর উদ্দীন বিশ্বাস ব্যতিক্রমী নজির রেখেছেন। এলাকায় একটা সততার নজির স্থাপন করেছেন।’
জীবননগর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ঢাকা টাইসেকে বলেন, ‘মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পে শাহপুর গ্রামের ভূমিহীন জমির উদ্দিন বিশ্বাসকে একটি ঘর দেওয়া হয়েছিল। তিনি পরিশ্রম করে স্বাবলম্বী হয়ে নিজ নামে জমি কিনে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। এ কারণে তিনি লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জমি ও ঘর ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।’