পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করবেন যেভাবে

কৃষি ও প্রকৃতি

নিউজ ডেষ্ক- পেঁয়াজ অধিক ফলন পেতে হলে উচ্চ ফলনশীল ও মানসম্পন্ন পেঁয়াজের বীজ নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ জানা জরুরি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণের কৌশল সম্পর্কে:

পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন পদ্ধতি : বীজের ফলন যতগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল তার মধ্যে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি অন্যতম । দুটি মৌলিক পদ্ধতির মাধ্যমে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করা যায়:

১.বীজ থেকে বীজ এবং ২.কন্দ থেকে বীজ : উন্নত ও অধিক ফলনের জন্য কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি সবচেয়ে উপযোগী হওয়ায় আমাদের দেশে সাধারণত কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন: সাধারণত উৎপাদিত পেঁয়াজ ফসল থেকে মাতৃকন্দ সংগ্রহ করা হয়। বীজ উৎপাদনের জন্য ৪-৬ সেমি. ব্যাসের কন্দ উপযুক্ত । বীজের বিশুদ্ধতার জন্য কন্দ উৎপাদন মৌসুমে সতর্কতার সাথে অস্বাভাবিক পত্রগুচ্ছ, রোগাক্রান্ত পেঁয়াজ গাছ ক্ষেত থেকে তুলে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। পরিপক্ব পেয়াজ কন্দ, চিকন গলা এবং রোগ মুক্ত পেঁয়াজের মাতৃকন্দ সংগ্রহ করতে হবে ।

মাতৃকন্দ সংরক্ষণ : পেঁয়াজ কন্দ উত্তোলনের পর এর পাতা ও শিকড় কেটে ৭-১০ দিন বায়ু চলাচল সুবিধা যুক্ত শীতল ও ছায়াময় স্থানে শুকিয়ে নিতে হবে । এরপর যথারীতি মাতৃকন্দের জন্য বাছাই ও শ্রেণীবিন্যাস করে ঠাণ্ডা ও বায়ুময় গুদামে সংরক্ষণ করতে হবে। মাঝে মাঝে পচা বা শুকনা পেঁয়াজ বেছে সরিয়ে ফেলতে হবে।

সংরক্ষণ পদ্ধতি: পেঁয়াজ ভালো করে শুকানোর পর গুদামজাত করতে হবে। গুদাম ঘর ঠাণ্ডা ও বায়ু চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে। মাঝে মাঝে গুদাম ঘর পরীক্ষা করে পচা ও রোগাক্রান্ত পেঁয়াজ বেছে সরিয়ে ফেলতে হবে। গুদাম ঘরের তাপমাত্রা হতে হবে ৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং ৬৪ শতাংশ আর্দ্রতাযুক্ত।

কাঁচা পেঁয়াজ কাগজের ব্যাগে ছিদ্র করে রেখে ৩ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। তবে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য আধুনিক উন্নত পদ্ধতি হলো ’জিরো এনার্জি স্টোরেজ’ পদ্ধতি। মূলত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ওই স্টোরেজ তৈরি করা হয়। এরপর এক ধরনের ওষুধ দিয়ে পরিশোধন করে নেওয়া হয়। তারপর সেখানে পেঁয়াজ রাখা হয়। এতে পেঁয়াজ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

যেভাবে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করবেন শিরোনামে লেখাটি লিখেছেন ড. মোঃ নুর আলম চৌধুরী, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মসলা গবেষণা কেন্দ্র, শিবগঞ্জ, বগুড়া। লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *