কেকের পরিবর্তে পাউরুটি কেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বৌরতলা দাখিল মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে কারাদণ্ডের পরিবর্তে (প্রবেশন) শাস্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই পড়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তবে, আদালত সঙ্গে এও বলেছেন যে, ওই দুই শিক্ষক যদি শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড সেই সঙ্গে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হবে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ রায় দেন বিচারক জিয়াউর রহমান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৭ মার্চ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বৌরতলা দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে কেকের পরিবর্তে সস্তা পাউরুটি কেটে দিবসটি উদযাপন করেন মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালাম ও শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া। এ সময় তারা তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘লাও থুবড়া খাও।’ ঘটনাটি তখন ফেসবুকে লাইভ করেন অন্য আরেক শিক্ষক।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে ওই দুইজনের নামসহ মোট ১১ জনের নাম উল্লেখ করে গোমস্তাপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।
একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়। পরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালত শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনের এই আদেশ দেন।
আলালত সূত্র জানায়, প্রবেশনের সময়ে ওই দুই শিক্ষককে মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস পড়তে হবে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন বই পড়তে হবে। আরও পড়তে হবে জাহানারা ইমামের লেখা একাত্তরের দিনগুলো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা নিয়ে সংকলন একাত্তরের চিঠি। এ ছাড়াও প্রতিজনকে ২০টি করে গাছ লাগিয়ে সেগুলোর যত্ন করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে প্রবেশন বাতিল করে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ের কপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মূলত কারাদণ্ডের পরিবর্তে অন্যভাবে শাস্তির আওতায় আনতে নিম্ন আদালতগুলো প্রবেশন দিয়ে থাকেন। এতে শর্ত মাফিক সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মানসিকভাবে পরিবর্তন হয়ে থাকে। পাশাপাশি চাপ কমে কারাগারের ওপর