নিউজ ডেষ্ক- বুয়েট ছাত্র ফারদীন নুর পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে তার পরিবার। নিখোঁজের তিন দিন পর গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের কোনো শত্রু ছিল না। আগামী মাসে তার কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। আমার ধারণা পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
নুর উদ্দিন আরও বলেন, পলাশের ব্যবহৃত মুঠোফোন, ঘড়ি ও মানিব্যাগ সঙ্গেই পাওয়া গেছে। আমার ছেলে খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি ডিবেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আগামী মাসে স্পেনের মাদ্রিদে একটি ডিবেটিং অনুষ্ঠানে তার অংশ নেওয়ার কথা ছিল। আমি এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাই।
গত শুক্রবার রাজধানী থেকে নিখোঁজ হন ফারদিন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিল না। পরে নিখোঁজের বিষয়টি জানিয়ে রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা নুর উদ্দিন। এতে বলা হয়, গত শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ফারদিন নূর রাজধানীর ডেমরা থানার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বুয়েটে তার আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন। পরদিন শনিবার সকালে তার পরীক্ষা ছিল। তবে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেননি। তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া ছেলের সন্ধান চেয়ে রোববার (৬ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন ফারদীনের বাবা নূরউদ্দিন। সেখানে ফারদিনকে শেষবার রামপুরা ব্রিজ এলাকায় দেখা যায় বলে জানান তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের-১৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তার সন্তান। আবদুর রশীদ হলের আবাসিক ছাত্র তিনি। শুক্রবার রাতে থেকে নিখোঁজ ফারদীন। তাকে শেষবার দেখা যায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায়। শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা থেকে ১১টার মধ্যে সেখানে অবস্থান করছিলেন তিনি। সেখান থেকে তার বুয়েটের হল কিংবা বাসায় ফেরার কথা। কিন্তু তিনি আর ফেরেননি।
এরপর পুলিশ ও পরিবারের পক্ষ থেকে পলাশের সন্ধানে খোঁজখবর নেওয়া হলেও সন্ধান মিলছিল না। অবশেষে তিন দিন পর গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে শীতলক্ষ্যা নদীর বনানীঘাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ।
ফারদিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার বাবা দাবি করলেও পুলিশ এখনো সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। পুলিশ বলছে, মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে ফারদিনের এক ছেলেবন্ধু ও এক বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার বান্ধবী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চার বছর ধরে তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, নিখোঁজের দিন ফারদিনের মুঠোফোনের শেষ অবস্থান ছিল ঢাকার কেরানীগঞ্জে। পুলিশ সিসি ক্যামেরার কয়েকটি ভিডিওচিত্র সংগ্রহ করেছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। ফারদিন কেরানীগঞ্জে কীভাবে গিয়েছিলেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি রফিকুল।